বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বিনিয়োগ বাড়াতে আসছে চার হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল

আলী রিয়াজ

বিনিয়োগ বাড়াতে আসছে চার হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল

বিনিয়োগ খরা কাটাতে উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল গড়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য চার হাজার কোটি টাকার এ তহবিল থেকে রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য ঋণ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। উদ্যোক্তারা কম সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে দুটি পৃথক তহবিল গঠন করা হবে। রিজার্ভের অর্থ ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল নিজস্ব তত্ত¡াবধানে পরিচালিত করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধি করে চলতি অর্থবছর (২০১৫-১৬) মুদ্রানীতি ইতিমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে নতুন দুটি তহবিল গঠন করার কথা বলা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এ ঋণ ব্যবহার করে স্বল্প সুদে বৈদেশিক বিনিয়োগে গতি আনতে ব্যবহার করা হবে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাজারের জন্য উৎপাদনমুখী প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন করা হবে। মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন উদ্যোক্তারা। জানা গেছে, এ তহবিল থেকে উদ্যোক্তারা বিদেশি মুদ্রায় ঋণ নিতে পারবেন। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার মাধ্যমেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। স্থানীয় মুদ্রার ক্ষেত্রে এই তহবিল ব্যবহার করা যাবে না। বিভিন্ন রপ্তানিমুখী শিল্পে যে কোনো ব্যাংক তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে ঋণ দিতে পারবে। নতুন শিল্প স্থাপন, শিল্পে আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপনে উদ্যোক্তারা এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ২৫ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। রিজার্ভ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে আলাদা একটি তহবিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব তত্ত¡াবধানে গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈদেশিক বাণিজ্য বিশেষ করে রপ্তানিমুখী শিল্প উন্নয়নে এই তহবিল ব্যবহার করা হবে। দেশের গার্মেন্ট শিল্পের রপ্তানি সহায়তায়ও উদ্যোক্তারা এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। এ ছাড়া রপ্তানিমুখী বস্ত্র, পোশাক ও চামড়া শিল্পে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া অর্থায়নের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা দেবে। এক্ষেত্রে হাজারীবাগ থেকে চামড়া শিল্প স্থানান্তরের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। বিশেষ করে সাভারে স্থাপিত চামড়া শিল্প নগরে স্থানান্তর করলেই সহজ শর্তে ঋণ পাবেন উদ্যোক্তারা। এসব শিল্পে আধুনিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে কোনো ধরনের মর্টগেজ ছাড়াই এলসি ঋণ পরিশোধ করে দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাংকের সহযোগিতায় নিতে হবে এই ঋণ। নতুন তহবিল সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য ও বিনিয়োগে গতি আনতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপনে বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রথম রিজার্ভের অর্থ বিনিয়োগে করা হচ্ছে।

এই প্রকল্প সফলতা বিবেচনায় আমরা আরও বেশি  হারে ঋণ দেব। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশে নিতে হলে বিনিয়োগ কয়েকগুণ বাড়াতে হবে। এর অংশ হিসেবেই নতুন পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের উদ্যোগ। ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় আইপিপিএফ প্রকল্পটি বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য ব্যয় সাশ্রয়ী দীর্ঘতর মেয়াদি অর্থায়ন জোগান দিচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর