বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ফিরে দেখা শেয়ারবাজার

বছর শেষেও ঘুরে দাড়াতে পারেনি

আলী রিয়াজ

নানা পদক্ষেপ নিলেও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের  আস্থা ফেরেনি। ফলে বছর শেষেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি শেয়ারবাজার। ২০১৫ সালের শুরুতে শেয়ারবাজার সূচক ছিল প্রায় পাঁচ হাজার পয়েন্ট। বছরের শেষ প্রান্তে তা প্রায় ৫০০ পয়েন্ট কমে সাড়ে হাজার পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এই সময় বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। শেয়ারবাজার থেকে বিভিন্ন কোম্পানির অর্থ উত্তোলনের পরিমাণ কমেছে ব্যাপক। শেয়ারবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার দর নিয়েও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হতাশ হতে হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে হলে বৃহৎ মূলধনী কোম্পানিকে বাজারে নিয়ে আসতে হবে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বাজারে নিয়ে আসার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া বাজার মনিটরিংয়ে এখনো ঘাটতি থাকায় বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছেন না। ফলে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ১ জানুয়ারি ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৯৪১ পয়েন্ট। এই এক বছরে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে ১১টি। এসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও বাজারে সূচক এক পয়েন্টও যোগ হয়নি, উল্টো কমেছে। বাজারের মোট শেয়ার দর হিসেবে বাজার মূলধন এক বছরে কমেছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে ডিএসইর বাজার মূলধন যেখানে ছিল ৩ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা। বছর শেষে তা কমে ৩ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। শেয়ারবাজারে আস্থা না থাকায় বিনিয়োগকারীও কমেছে। বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় দেড় লাখ বিও অ্যাকাউন্ট। বিভিন্ন কারণে বিনিয়োগকারীরা এসব অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করা সিডিবিএল বন্ধ করে দিয়েছে। শেয়ারবাজারের প্রাণ বলে পরিচিত মিউচুয়াল ফান্ডে সবচেয়ে দুর্দিন ছিল চলতি বছর। এই এক বছরে নতুন একটি মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে এলে ৪০টি ফান্ডের মধ্যে ৩০টির দর অভিহিত মূল্যের নিচে। এমনকি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের মিউচুয়াল ফান্ড বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩ টাকায়। ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ৮টির শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের নিচে। এমনই বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এক বছরে এক টাকাও বাড়েনি, এমন রয়েছে প্রায় শতাধিক কোম্পানি। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের আস্থাও কমেছে শেয়ারবাজারে। এক বছরে বিভিন্ন কোম্পানি ২০১৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮৩০ কোটি টাকায়। ২০১৪ সালে যা ছিল ৩ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন কমেছে ২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা। বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সুখবর ছিল শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ। বাংলাদেশ ব্যাংক সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বিনিয়োগ ব্যাংকের মূলধন থেকে বাদ দিয়ে নতুন সুযোগ দেয়। এতে গত কয়েক দিন কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে।

সর্বশেষ খবর