বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাগজ পণ্যে অন্য দেশকে দেওয়া শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহার হয়নি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

কাগজ পণ্যে অন্য দেশকে দেওয়া শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহার হয়নি

বাংলাদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতসহ সাফটাভুক্ত দেশগুলোকে যে ২৩টি পণ্যে শুল্ক সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে কাগজ জাতীয় দুটি পণ্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছিল ট্যারিফ কমিশন। তবে এর প্রায় পাঁচ মাস পরও পণ্য দুটি প্রত্যাহারে কোনো অগ্রগতি নেই। বাংলাদেশ পেপার মিলস এসোসিয়েশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের কাগজ শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে গত বছরের ২৭ আগস্ট ৪৮০৪.১৯ ও ৪৮১১.৪৯ এই দুটি এইচএস কোড যুক্ত ক্রাফট পেপার, পেপার বোর্ড, ফাইবারস ও কোটেড সিট জাতীয় পণ্য সাময়িকভাবে শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পক্ষে মতামত দেয় ট্যারিফ কমিশন। সাফটার সেফগার্ড বিধানের আওতায় পণ্য দুটি সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে বলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেয় সংস্থাটি। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওই মতামত পাওয়ার পর সেখানেই থেমে আছে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম। ট্যারিফ কমিশনের মতামত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মনোজ কুমার রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে গতকাল জানান, আলোচ্য পণ্য দুটি প্রত্যাহার করতে হলে নতুন করে সাফটার আলোচনা শুরু করতে হবে। অথবা সংশ্লিষ্ট পণ্য দুটিকে সেফগার্ড উদ্যোগের আওতায় এনে অতিরিক্ত শুল্কারোপ করা যতে পারে। তবে এ ধরনের সেফগার্ড উদ্যোগ নিতে হলে দেশীয় শিল্পের ক্ষতির বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে হবে। পণ্য প্রত্যাহারের যুক্তি হিসেবে পেপার মিলস এসোসিয়েশনের আবেদনে বলা হয়েছিল, ‘আলোচ্য পণ্য দুটি দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, এ খাতে যথেষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা হয়েছে।’ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সাফটার বাণিজ্য উদারীকরণ কর্মসূচির ফেজ ২-এর আগে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশের স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকায় ১ হাজার ২৪১টি পণ্যের মধ্যে ৪৮০৪.১৯ ও ৪৮১১.৪৯ এই দুটি এইচএস কোড যুক্ত পণ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। দ্বিতীয় ফেজে স্পর্শকাতর তালিকা থেকে ২০ শতাংশ কমানোর বাধ্যবাধকতা থাকায় সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীদের সঙ্গে সভা করে ১ হাজার ২৪১টি পণ্য হতে ২৪৮টি পণ্য বাদ দিয়ে ৯৯৩টি স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ২০১১ সালে স্পর্শকাতর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া ২৪৮টি পণ্যের মধ্যে আলোচ্য পণ্য দুটি ছিল। এ ব্যাপারে ট্যারিফ কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, সাফটার বাণিজ্য উদারীকরণ কর্মসূচির আওতায় শুল্ক সুবিধা প্রদত্ত পণ্য দুটি শুধু ভারত নয়, সাফটাভুক্ত সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য। আলোচ্য দুটি পণ্য শুল্ক সুবিধার আওতা থেকে প্রত্যাহার করতে হলে সাফটা চুক্তির আর্টিকেল ৭.৩বি অনুযায়ী প্রতি চার বছর পর পর স্পর্শকাতর পণ্য তালিকা নিয়ে যে পর্যালোচনা হয় সেখানে বাংলাদেশের আবেদন জানাতে হবে। এ ছাড়া সাফটার মিনিস্ট্রিয়াল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এর কম সময়েও স্পর্শকাতর পণ্য পর্যালোচনার সুযোগ রয়েছে। তবে আর্টিকেল ১৫ এবং ১৬ অনুযায়ী প্রদত্ত শুল্ক সুবিধা সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের।

সর্বশেষ খবর