৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৪:৩২

বগুড়ার শেরপুরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শেরপুরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের একক দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ডাকা বিশেষ বর্ধিত সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে সমঝোতা করা সম্ভব হয়নি। 

বরং একপেশে সিদ্ধান্ত নেয়ার অভিযোগ এনে ওই সভা বর্জন করেন নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী চার প্রার্থী। এমনকি তারা পাল্টা সভা ডেকে পৌর নির্বাচনে নৌকার মাঝি নির্বাচন করারও ঘোষণা দিয়েছেন। এ অবস্থায় নেতাকর্মীরা দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

জানা যায়, আগামী ১৬ জানুয়ারি হতে যাওয়া শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে গত শুক্রবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের স্থানীয় টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা অনার্স কলেজের সভাকক্ষে বিশেষ বর্ধিত সভা ডাকা হয়। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, স্থানীয় এমপি হাবিবর রহমানসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

কিন্তু সভায় দলের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে একপেশে সিদ্ধান্ত নেয়ার অভিযোগ তুলে পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচজনের মধ্যে চারজনই বর্ধিত সভা বর্জন করেন। তারা হলেন- বর্তমান পৌর মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বীয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববি ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক। 
তবে তারা সভা বর্জন করলেও উপস্থিত থাকা পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার রহমান মিন্টুকে এক নম্বর করে প্রার্থীদের একটি প্যানেল জেলায় পাঠানো হয়। জানতে চাইলে একই তথ্য নিশ্চিত করেন শেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মকবুল হোসেন।

তিনি বলেন, বর্ধিত সভায় দলের গঠনতন্ত্র ও যথাযথ নিয়ম মেনেই পৌরসভার সব ওয়ার্ড কমিটি সভাপতি ও সম্পাদকসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত নেয়া হয়। আর সেই মতামতের ভিত্তিতেই একটি প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়ায় সারোয়ার রহমান মিন্টুকে এক নম্বর করে বাকি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামসহ গঠিত প্যানেলটি জেলায় পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে জেলা ও কেন্দ্র থেকে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে বলে জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা। 

এদিকে ওই বর্ধিত সভায় গঠিত প্রার্থী প্যানেলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন পৌর নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী অন্য চার প্রার্থী। এমনকি পাল্টা সভা ডেকে আলাদা প্রার্থী প্যানেল তৈরি করে জেলায় পাঠানো হবে বলেও ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতা বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববি বলেন, দুঃসময় ও দুর্দিনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলের জন্য কাজ করেছি। এছাড়া একাধিকবার পৌর কাউন্সিলর নির্বাচন করে বিজয়ী হই। তাই এবার মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন ও নৌকা প্রতীক পাওয়ার দাবিদার আমি। এজন্য পৌর নির্বাচন করার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু বর্ধিত সভায় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে একপেশে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাই ওই সভা বর্জন করি। 

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার জানান ওই বর্ধিত সভায় কী ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা জানা নেই। কারণ তাদের বাদ রেখেই একতরফাভাবেই এটি হয়েছে। সেখানে সব মনোনয়ন প্রত্যাশীর মতকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। তাই অচিরেই সভা ডেকে পাল্টা প্রার্থী প্যানেল তৈরি করে জেলা ও কেন্দ্রে পাঠানো হবে। 

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর