৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:৩১

বাবা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় পুত্র মেয়র প্রার্থী!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বাবা জেলা আওয়ামী লীগের
সভাপতি হওয়ায় পুত্র মেয়র 
প্রার্থী!

দ্বিতীয় দফায় আগামী ১৬ জানুয়ারি বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে জটিলতা কাটছেই না। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেই তিনি শেরপুর পৌরসভার মেয়র প্রার্থী হওয়ার জন্য নিজের ছেলের পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে উপেজলা আওয়ামী লীগে এখন বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। বলা হচ্ছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু দলের মধ্যে পরিবারতন্ত্রকে বাস্তবায়ন করছেন। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। 

অভিযোগ উঠেছে, দলের দুঃসময়ে জীবন বাজি রাখা ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে ছেলেকে মেয়র প্রার্থী করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরই ধারাবাহিকতায় তড়িঘড়ি করে প্রার্থী বাছাইয়ের নামে পৌর কমিটির বিশেষ বর্ধিতসভাও ডাকা হয়। সেখানে দলের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে নেতাকর্মীদের চাপ প্রয়োগ করে ছেলে শিল্পপতি সারোয়ার রহমান মিন্টুর পক্ষে সমর্থন বাগিয়ে নেন তিনি। একই সঙ্গে তাকে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার জন্য বর্ধিতসভার রেজুলেশন তৈরি করে দলের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে প্রস্তাবও পাঠানো হয়। 

তবে এসব কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে পৌর নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী চার প্রার্থী ওই সভা বর্জন করেন। এমনকি তারা উপজেলার বর্ধিত সভার সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করে দলের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের নিকট আবেদন জানান। এছাড়া সেখান থেকেই মেয়র পদের দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। তারা হলেন বর্তমান পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বীয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববি ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক।  

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বীয়ার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৪ ডিসেম্বর পৌর কমিটির বর্ধিত সভা আহবায়ন করা হয়। মিটিংয়ে গঠনতন্ত্র মোতাবেক কোন কার্যকলাপ না করে বগুড়া জেলা আওয়মী লীগের সভাপতি ও শেরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান মজনু তার পকেট কমিটির মাধ্যমে তার ছেলে অরাজনৈতিক ব্যক্তি মো. সারোয়ার রহমান মিন্টুর নামে পৌর কমিটিকে দিয়ে একটি রেজুলেশন তৈরি ও সুপারিশ করে নেন। ওই চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, তার স্ত্রী শিল্পী রহমান উপনির্বাচনে ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য শেরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দলে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে নেয়া এসব বিতর্কিত কাজে নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বলেও দাবি করেন ওই দুই আওয়ামী লীগ নেতা। 
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বীয় বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলে সারোয়ার রহমান মিন্টু একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি। তিনি কখনো মাঠ পর্যায়ে রাজনীতি করেননি। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে এবং গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন করা হউক।  

তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বলেন, পৌরসভার সব ওর্য়াড কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমর্থনের কারণেই সারোয়ার রহমান মিন্টুকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার জন্য শেরপুর পৌর কমিটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। এক্ষেত্রে চাপ প্রয়োগ বা প্রভাব বিস্তারের কোন প্রশ্নই ওঠে না। দলের সংবিধান মেনেই যথাযথভাবে বর্ধিতসভা সম্পন্ন হয় এবং সেখানকার নেতাকর্মীরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই অহেতুক কাল্পনিক অভিযোগ তুলে কোন লাভ নেই। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর