২৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ২২:৪৯
পৌরসভা নির্বাচন

কুড়িগ্রামে শেষ মুহূর্তে চলছে প্রার্থীদের জমজমাট প্রচারণা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে শেষ মুহূর্তে চলছে প্রার্থীদের জমজমাট প্রচারণা

ফাইল ছবি

কুড়িগ্রামে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মুহূর্তে চলছে জমজমাট প্রচার-প্রচারণা। ২৮ ডিসেম্বর প্রথম দফায় পৌর নির্বাচন। সারা দেশের ন্যায় কুড়িগ্রামেও চলছে রাতভর বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের প্রচারণা।

ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়াসহ শীতকে উপেক্ষা করে ভোটারদের মন জয় করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সব দলের প্রার্থীরা। এবারে প্রধান দুটি দলেই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিপাকে রয়েছেন ভোটাররা। ফলে মুখ খুলতে চাইছেন না কেউই।

অপরদিকে, প্রথমবারের মতো পৌরসভা নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিতে পারবে জেনে উচ্ছ্বসিত নতুন ভোটাররা। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন, কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মো. কাজিউল ইসলাম। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা সাইদুল হাসান দুলাল।

অপরদিকে, বিএনপি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুইজন প্রার্থী। যাদের একজন আগে ছিলেন বিএনপির দলীয় মেয়র।কিন্তু এবার দুইজন প্রার্থীই বিএনপির শক্ত প্রার্থী বলা হলেও কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং সহকারী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বেবু।

তবে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন অপর নেতা ও সাবেক জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এবং সাবেক পৌর মেয়র আবু বকর সিদ্দিক। তিনি নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে মাঠে ঘুরে ঘুরে ভোট চাইছেন।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি দলে এখন দুইজন করে প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা পড়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। এছাড়াও মেয়র পদে হাত পাখা প্রতীকে ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী হয়েছেন মো. আব্দুল মজিদ।

এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজিউল ইসলাম সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও বিএনপি প্রার্থীরা ধীরে ধীরে তাদের মাঠ গুছিয়ে নিচ্ছেন। সম্প্রতি বিএনপির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম বেবুর পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতা সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কয়েক দফা তাকে সাথে নিয়ে ভোট চেয়েছেন ভোটারদের কাছে গিয়ে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজিউল ইসলামের জন্য ভোট চাচ্ছেন সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জাফর আলীসহ জেলার নেতৃবৃন্দ।

ভোটারদের দাবি রাস্তা-ঘাটসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন। নতুন ভোটাররা খুশি ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারবে জেনে। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

জিয়া বাজার এলাকার নারী ভোটার লুনা জাহান বলেন, আমরা দেখে-শুনে এবার যোগ্য প্রার্থীকেই পৌর পিতার আসনে বসাব। যিনি প্রথম শ্রেণির পৌরসভাকে আরো উন্নয়নের শিখড়ে নিয়ে যাবেন, তাকেই নির্বাচিত করব।

অপরদিকে, নতুন ভোটার আকাশ আলম বলেন, এবার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে মজাই আলাদা। তবে যোগ্য প্রার্থী দেখে ইভিএমের বোতাম চাপব।

জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম রাকিব বলেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। যাতে কেউ কোনো অভিযোগ তুলতে না পারে, সে ব্যাপারে কমিশন সচেষ্ট রয়েছে।

উল্লেখ্য, এবারের কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৫৬ হাজার ৩৯৫ জন। তার মধ্যে নারী ভোটার ২৯ হাজার ৪৮ জন এবং পুরুষ ভোটার ২৭ হাজার ৩৪৭ জন। আগামী ২৮ডিসেম্বর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ২৪টি ভোট কেন্দ্রের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। 

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর