শিরোনাম
২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৬:২৪

ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলন বর্জনের আহ্বান দলের ৬ কেন্দ্রীয় নেতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলন বর্জনের আহ্বান দলের ৬ কেন্দ্রীয় নেতার
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির চার দিনব্যাপী দশম কংগ্রেস (কেন্দ্রীয় সম্মেলন)। কিন্তু তার আগে দলের মতাদর্শগত, নীতি ও কৌশল পরিবর্তনের অভিযোগ তুলে সম্মেলন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর দুই সদস্য নুরুল হাসান ও ইকবাল কবির জাহিদসহ ৬ কেন্দ্রীয় নেতা। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। 
 
বিবৃতিতে নাম থাকা পার্টির অন্য ৪ জন নেতা হলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাকির হোসেন হবি, মোফাজ্জেল হোসেন মঞ্জু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান অনিল বিশ্বাস। কেন্দ্রীয় কমিটির বিকল্প সদস্য তুষার কান্তি দাস।
 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৯২ সালের ৪ মে ঐক্য কংগ্রেসে গৃহীত মতাদর্শগত, নীতি ও কৌশল থেকে পার্টি ক্রমান্বয়ে দক্ষিণপন্থী, বিলোপবাদী ধারায় অধঃপতিত হয়েছে। ঐক্য কংগ্রেসের লক্ষ্য ছিল কমিউনিস্ট ঐক্যকে এগিয়ে নেওয়া, বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামই হবে পার্টির ভিত্তিমূলক কাজ। পার্টির বর্তমান নেতৃত্ব ঐক্য কংগ্রেসের মতাদর্শ নীতি, কৌশল ও সংগঠন সম্পর্কে গৃহীত ভিত্তি ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে।
 
আমরা দীর্ঘদিন ধরে পার্টির অভ্যন্তরে মতাদর্শগত বিচ্যূতি, বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তি ও বিলোপবাদী রাজনীতির বিরোধিতা করে আসছি। ইতোমধ্যে পার্টি তার সংগ্রামী ভাবমূর্তি হারিয়ে ফেলেছে এবং জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। পার্টি ও তার গণসংগঠন সমূহ দুর্বল হয়ে পড়েছে। ১৪ দলের সাথে কর্মসূচি ভিত্তিক ঐক্য, হাতুড়ি ছেড়ে নৌকা মার্কায় নির্বাচন ও সরকারে মন্ত্রিত্ব গ্রহণের মাধ্যমে পার্টির নীতি আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়েছে। এই ভ্রান্তনীতির অনুসরণের ফলে পার্টির অগণিত নেতা, কর্মী এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বরিশালে জেলা সম্মলনে অগণিত পাটি কর্মী এবং জনগণের দাবির মুখে ২০১৮ সনের প্রহসনের নির্বাচন সম্পর্কে পার্টি সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন যে সত্য উচ্চারণ করেছিলেন পরদিন তার ইউটার্ন পাটি অনুসৃত বর্তমান রাজনীতিরই অনিবার্য ফল। 
 
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি বর্তমানে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আদর্শ থেকে বিচ্যূত হয়ে সংস্কারবাদী, সুবিধাবাদী পার্টিতে পরিণত হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্ব আজ রাজনৈতিক দুর্নীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুর্নীতিতে আক্রান্ত, বাস্তবতার নামে বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তির রাজনৈতিক লাইন ও জোটনীতি তথা আওয়ামী লীগের সাথে স্থায়ী ঐক্যের যে নীতি-কৌশল গ্রহণ করে চলেছে তাতে ওয়াকার্স পার্টি অধঃপতিত হয়ে দেউলিয়া পার্টিতে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে আন্তঃপার্টি সংগ্রাম তথা দুইলাইনের সংগ্রামকে গলা টিপে হত্যা করতে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বিভিন্ন জেলায় অবিশ্বাস্য সংখ্যক পার্টি সভ্যপদ প্রদানের মাধ্যমে ভুয়া প্রতিনিধিদের ১০ম পাটি কংগ্রেসে উপস্থিত করানোর সকল আয়োজন ও প্রস্ততি সম্পূর্ণ করেছে। 
 
স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক কংগ্রেস অনুষ্ঠানে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় পার্টি সভ্যপদ যাচাই-বাছাই করার প্রস্তাব আমরা উত্থাপন করেছিলাম। কিন্ত সভ্যপদ যাচাই-বাছাই এর ওই প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। সুতরাং একথা এখননির্দ্বিধায় বলা যায় যে, পার্টি সভ্যপদ যাচাই না করে অবৈধ প্রতিনিধিদের নিয়ে পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হলে ওই কংগ্রেস হবে অবৈধ কংগ্রেস। তাই নতজানু আপোষকামী তথা তালমিল করে চলার নীতি পরিহার করে আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে আমরা ১০ম পার্টি কংগ্রেসে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। লাল পতাকাকে সমুন্নত রাখতে দক্ষিণপন্থী সুবিধাবাদকে পরাস্ত করে সত্যিকারের বিপ্লবী পার্টি, কমিউনিস্ট ঐক্য, বাম- গণতান্ত্রিক ঐক্য গড়ে তুলতে সকল পার্টি কমরেডদের এই প্রহসনের কংগ্রেসে অংশগ্রহণ না করার আহ্বান জানাচ্ছি। 
 
বাংলাদেশে বর্তমান বাস্তবতায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপর্যয়, দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়ন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে আর ১৪ দল ও সরকার নয়, পার্টির স্বাধীন ভূমিকা নিতে হবে। অপরদিকে বিএনপি- জামায়াত, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক শাক্তির সকল প্রকার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। 
 
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর