১৪ জুলাই, ২০২১ ১৭:১৫

জনশুমারিতে প্রতিবন্ধীদের গণনার আহ্বান ডিজ্যাবিলিটি এল্যায়েন্স’র

অনলাইন ডেস্ক

জনশুমারিতে প্রতিবন্ধীদের গণনার আহ্বান ডিজ্যাবিলিটি এল্যায়েন্স’র

অনলাইন আলোচনায় অংশগ্রহণকারীর।

দেশের ষষ্ঠ জনশুমারিতে (২০২১) প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের গণনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডিজ্যাবিলিটি এল্যায়েন্স অন এসডিজিস বাংলাদেশ। সংগঠনটি ২৬টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করছে।

বুধবার অনুষ্ঠিত ’প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ২০২১-সালের জনশুমারিতে অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এই আহ্বান জানায় ডিজ্যাবিলিটি এল্যায়েন্স।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক ঘোষ সুবব্রত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনের ট্রাস্ট্রি মনসুর আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইটসেভার্স বাংলাদেশ অফিসের অ্যাডভোকেসি কোর্ডিনেটর থেকে অয়ন দেবনাথ। মূল প্রবন্ধে উঠে আসে দেশের বর্তমান প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত অনেক বেশি সেকেলের এবং ২০২১ সালের জনশুমারি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংখ্যা গণনার একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেছে। উপস্থাপক আগামী জনশুমারিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংখ্যা গণনার আইনগত
বাধ্যবাধকতার উপরেও তার উপস্থাপনায় জোর প্রদান করেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীতা বিষয়ে যথেষ্ট সংবেদনশীল। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন-২০১৩ এবং প্রতিবন্ধীতা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা-২০১৯ প্রণয়ন করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২১-সালের জনশুমারিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংখ্যা গণনার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।’

ডিজ্যাবিলিটি এল্যায়েন্স অন এসডিজিস বাংলাদেশ-এর কনভেনার ও সাইটসেভার্সের কান্ট্রি ডিরেক্টর অমৃতা রেজিনা রোজারিও অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত জাতি হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নেবে। কিন্তু যতদিন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্য উপাত্ত সঠিকভাবে নিরুপণ এবং তথ্য উপাত্তের বৈপারিত্তের অবসান না করা যাবে, আমাদের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে।’

২০২১-সালের জনশুমারির প্রশ্নমালা ছয় ধরনের প্রতিবন্ধীতার কথা উল্লেখ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন-২০১৩ বারো ধরনের প্রতিবন্ধীতা সঙ্গায়িত করেছে। এই বিষয়টির প্রসঙ্গে অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা বলেন, ‘জনশুমারির প্রশ্নমালা দেশের বিদ্যমান আইনের আলোকে প্রণয়ন করা জরুরি।’ তিনি জনশুমারি প্রশ্নমালার একটি ব্রেইল সংস্করণ তৈরি করার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক ঘোষ সুবব্রত ডিজ্যাবিলিটি এল্যায়েন্স-এর প্রস্তাবনাগুলো বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ডিজ্যাবিলিটি এল্যায়েন্স-এর মধ্যে কারিগরি সহায়তার লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেন।

বিভিন্ন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের সদস্যরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও মতামত প্রদান করেন। ওয়েবিনারে একাধিক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাও সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনসমূহকে তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা, তথ্য প্রচার কার্যক্রমে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা, তথ্য সংগ্রাহকদের প্রতিবন্ধীতা বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা, তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি এবং তাদের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর