১৪ আগস্ট, ২০২১ ১১:৪৬

লকডাউন তুলে নেওয়ায় উদ্বেগ জাতীয় কমিটির, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক

লকডাউন তুলে নেওয়ায় উদ্বেগ জাতীয় কমিটির, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা

করোনাভাইরাস মহামারিতে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে গত ১ জুলাই থেকে সারা দেশে কঠোর লকডাউন আরোপ করেছিল সরকার। কিন্তু ঈদুল আজহা সামনে রেখে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। এরপর আবার ২৩ জুলাই থেকে  ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছিল কঠোর বিধিনিষেধ। পরবর্তীতে সেই বিধিনিষেধ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে আদেশ জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। 

এরপর গত ১১ আগস্ট থেকে সীমিত আকারে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়। আর আগামী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৯ আগস্ট থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল করবে। একই দিন থেকে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র চালু রাখা হবে। তবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।  

বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কমিটির ৪৪তম অনলাইন সভা শেষে গতকাল শুক্রবার (১৩ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে 'লকডাউন' তুলে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানানো হয়। 

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৩ জুলাই থেকে ১০ই অগাস্ট পর্যন্ত চলা লকডাউন কঠোরভাবে পালিত হয়নি। কিন্তু জনসমাবেশ হওয়ার মতো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় সংক্রমণ হারে উন্নতি দেখা গেছে। তবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কোনোটাই স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আসেনি। জীবিকা ও দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা সরকারের দায়িত্ব স্বীকার করলেও কমিটি মনে করে, বিধিনিষেধ শিথিল করার ক্ষেত্রে সরকার তাড়াহুড়ো করছে। এর ফলে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা বাড়তে পারে, তাতে অর্থনীতি আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় সাম্প্রতিককালে সরকারের দ্রুত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তে জাতীয় কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

সরকারের গৃহীত সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি বলছে, চলমান লকডাউন আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ চলমান রাখতে পারলে সুফল পুরোপুরি পাওয়া যেত। অন্তত সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, পর্যটন-বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি আরও কিছুদিন বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।

এছাড়াও বেশ কিছু ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা না রেখে কেবলমাত্র বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া, সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচল, যেক্ষেত্রে সম্ভব বাড়িতে বসে কাজ করা ও অনলাইন সভা/ কর্মশালা/ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখে অফিস খোলা রাখা, অফিস, আদালত, ব্যাংক, দোকানপাট, বাজার খোলার শতভাগ সঠিকভাবে তিন লেয়ার বিশিষ্ট মাস্ক পরার নিশ্চিত করা না গেলে বন্ধ রাখা।

এছাড়াও সকল ক্ষেত্রে শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়েছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর