৬ আগস্ট, ২০২২ ১২:২৫

ভোটাধিকারের দাবিতে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে সিপিবির আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক

ভোটাধিকারের দাবিতে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে সিপিবির আহ্বান

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জাতীয় পরিষদ সভা

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জাতীয় পরিষদ সভায় বলা হয়েছে, পার্টির দ্বাদশ কংগ্রেস আমাদের যে পথের নির্দেশনা দিয়েছে, সেই পথে চলমান দুঃশাসনের অবসান ও ব্যবস্থা বদলের সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সভায় দুঃশাসনের অবসান ও ভোটাধিকারের দাবিতে জোর লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সারাদেশে পার্টির নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

গতকাল শুক্রবার সকালে মুক্তি ভবনে সিপিবি সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রাজনৈতিক রিপোর্ট ও করণীয়বিষয়ক রিপোর্ট উত্থাপন করেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স। সাংগঠনিক কার্যক্রমের রিপোর্ট উত্থাপন করেন পার্টির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা। 

সভায় বক্তব্য দেন পার্টির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কমরেড সহিদুল্লাহ চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। 

আলোচনায় অংশ নেন আব্দুস সামাদ মিয়া, নূরে আলম বিপ্লব, মো. আফতাব হোসেন (কাজল), আবু সায়েম, খন্দকার লুৎফর রহমান, প্রশান্ত দাস হরি, কুলসুম বেগম, খান আসাদুজ্জামান মাসুম, অরুণ কুমার শীল, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, অ্যাডভোকেট বিমল চন্দ্র শীল, ওয়াহেদুজ্জামান মতি, নির্মল চৌধুরী, দিলীপ কুমার পাইক, রেবেকা সরেন, মো. আবু হোসেন, জামশেদ আনোয়ার তপন, দেওয়ান মো. বদিউজ্জামান, ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম, সাদেকুর রহমান শামীম, অধ্যাপক আবুল ইসলাম সিকদার, মোজাহারুল হক, মো. জাহাঙ্গীর, সাজেদুল ইসলাম সাজু, সিরাজুম মুনির, আমিনুল ফরিদ, আব্দুর রহমান রুমি, আবুল হোসেন, আখতারুল ইসলাম রাজু, পীযুষ চক্রবর্তী, ইসমাইল হোসেন, শেখ আব্দুল হান্নান, অশোক দেব জয়, সুশান্ত ভাওয়াল, শিবনাথ চক্রবর্তী, অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র মজুমদার, ম. হেলাল উদ্দিন, শেখ বাহার মজুমদার, মোস্তাফিজুর রহমান মিলন, নলিনী সরকার, দিলীপ দাস, সালফী আল ফাত্তাহ, শফিকুল ইসলাম, শামসুজ্জামান হীরা, সুকান্ত শফি চৌধুরী, হামিদা খাতুন, শ্রীকান্ত মাহাতো, কামাল উদ্দিন, মুনিরুজ্জামান শানু, আবুল হাশিম কবির, অমৃত বড়ুয়া, মো. রমজানুজ্জামান, কামাল হোসেন, আকতার হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস।

সভায় বলা হয়, দেশে সাধারণ মানুষের সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ক্ষমতাসীনরা মানুষের সংকট লাঘবে নতুন করে বিশেষ কোনো ভূমিকা না নিয়ে মানুষকে উপহাস করে চলেছে। সবকিছুতে দাম বাড়ানোকেই যেন করণীয় হিসেবে ঠিক করে বাস্তবায়ন করছে। সর্বশেষ ইউরিয়া সারের মূল্য ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি, ওষুধ, নিত্যপণ্য, গ্যাস, পানি, সাবান, বিদ্যুতের লোডশেডিং এর পরেও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পায়তারাসহ এমন কোনো পণ্য বা সেবাধর্মী বিষয় পাওয়া যাবে না যার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে না। অধিকাংশ মানুষের আয় কমলেও জীবনযাত্রার ব্যয় অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।

সভায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনাকালে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষের আয় কমে যাওয়ায় সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অভিঘাতে দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি ও সারের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশে নতুন করে ৫০ লাখ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাবে বলে গবেষকরা বলছেন।

সভায় বলা হয়, মুক্তবাজারের নামে লুটপাটের অর্থনীতির ধারায় চলমান সরকারের নীতি এসব সংকট বাড়িয়ে তুলছে। মানুষের মুক্তির পথ দূরে থাক স্বস্তির পথ দেখতে পারছে না। মানুষের ক্ষোভ দমনে ভয়ের রাজত্ব চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এতে করে সংকট আরও বাড়ছে। এই ধারা চলতে থাকলে সংকট আরও তীব্র হবে।

জাতীয় পরিষদের সভায় বলা হয়, ভোট ও ভাতের দাবিতে সামনের কাতারে থেকে লড়াই করতে হবে। এই লক্ষ্যে সকল স্তরের কর্মী-সমর্থকদের সক্রিয় করে শ্রেণি আন্দোলন, গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে স্থানীয় ও জাতীয় ইস্যুকে সামনে আনতে হবে। পরিকল্পিতভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় প্রণীত কর্মসূচিতে স্থানীয় জনগণের দাবি যুক্ত করে এগুতে হবে। উপজেলা শহরে-জেলায় পদযাত্রা, সভা, সমাবেশের পরিমাণ বাড়াতে হবে। ওই ধারায় আগামীতে সারা দেশ থেকে রাজধানীতে সমবেত হয়ে আমাদের দাবিসমূহ তুলে ধরতে হবে। এসব সংগ্রাম পরিচালিত হবে শাসকদের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে দেশবাসীর সামনে ক্ষমতার বিকল্প শক্তি সমাবেশ ঘটাতে।

সভায় বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে বাম জোটের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অন্যান্য বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তিকে এই জোটে সমবেত করতে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

সভায় আগস্ট-সেপ্টেম্বর ২০২২ এর মধ্যে জেলা-উপজেলা-শাখা নেতৃত্বের সাংগঠনিক কর্মশালা, আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত জেলা-উপজেলা সদর এবং আগামী নভেম্বরে জাতীয় সমাবেশের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রস্তুতি নিতে সারা দেশের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর