১৪ মার্চ, ২০২৩ ১৩:৪১

সরকার বিদ্যুৎ সেক্টরকে দুর্নীতির প্রধান খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার বিদ্যুৎ সেক্টরকে দুর্নীতির প্রধান খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে: ফখরুল

সরকার বিদ্যুৎ সেক্টরকে দুর্নীতির প্রধান খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ফখরুল বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এর মাধ্যমে সরকার যখন দেশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বির্পযের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, এরই মধ্যে উন্মোচিত হল আরও এক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী আদানি- বিপিডিবি চুক্তি। সরকার ৫ নভেম্বর ২০১৭ সালে ভারতের আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেড এর সাথে ২৫ বছর মেয়াদি ১,৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ (কয়লা ভিত্তিক) ক্রয়ের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতায় আদানি পাওয়ারকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে দিতে হবে ১,১৭,০৫৮ কোটি টাকা (১ ডলার = ১০৬.৩২ টাকা), যা দেশের কয়লাচালিত অন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ এর তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।

তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, ক্রয়মূল্যের আরেক উপাদান- জ্বালানির জন্য দেশের অন্যান্য কয়লাভিত্তিক জ্বালানি মূল্যের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি মূল্য দিতে হবে আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করতে।  

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সকল খরচসহ আদানি পাওয়ারে ব্যবহৃত প্রতি টন কয়লার মূল্য ধরা হয়েছে ২০০ ডলারের মত। অথচ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড আদানি পাওয়ারকে টন প্রতি মূল্য দিতে হবে ৪০০ ডলার- অর্থাৎ দ্বিগুন। আদানি পাওয়ার চুক্তির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কয়লার এই চড়া দাম আদায় করতে চায়। আর এই সকল মূল্যই দিতে হবে মার্কিন ডলারে, যা বর্তমান নিম্নমুখি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে আরও তলানিতে নিয়ে ঠেকাবে।

তিনি বলেন, দেশবাসীকে জানাতে চাই বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশের স্বার্থ বিনষ্টকারী এ ধরনের সকল চুক্তি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য, বিকল্প ও মিশ্র-জ্বালানির সংস্থান করা হবে এবং স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতকে পুনর্গঠন ও টেকসই করে গড়ে তোলা হবে। 

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বর্তমান অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারকে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় অবাধ ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে জন্য দলমত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেককে চলমান গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।

ফখরুল বলেন, এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার, জবাবদিহিমূলক সরকারের জন্য আমরা আন্দোলন করছি। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্যাহ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন। এছাড়াও জেড খান রিয়াজ উদ্দীন নসু, সাঈদ সোহরাব, বাবুল আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. হানিফও উপস্থিত ছিলেন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর