২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের সংঘর্ষের পর এক মাস হলো তালাবদ্ধ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। একই অবস্থা দলটির গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় অফিসগুলোর। লাগাতার কর্মসূচি পালন করলেও বিএনপি অফিসে নেই নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি। অফিস ফাঁকার প্রধান কারণ গ্রেফতার আতঙ্ক। গতকাল সকালে সরেজমিন নয়াপল্টনে গিয়ে দেখা যায়, দলটির সদর দরোজায় তালা ঝুলছে। বন্ধ কলাপসিবল গেটের ওপারে রিসিপশন টেবিলে ধুলা আর ময়লা। আশপাশে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। একই চিত্র পাশের নিচতলার সেমিনার হলের। অফিস ভবনের সামনের ফুটপাতে সতর্ক প্রহরায় পুলিশ সদস্যরা। পাশের গলিতেও পুলিশের অবস্থান। এক মাস ধরে বন্ধ অফিসের সামনে অবস্থান করছে পুলিশ ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ অবস্থার সূত্রপাত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে সহিংসতাকে ঘিরে। কাকরাইল মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মহাসমাবেশ পন্ড হয়ে যায়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ। এ অবস্থায় হরতাল ঘোষণা দিয়ে দ্রুত মঞ্চ ত্যাগ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর থেকেই বিএনপি অফিসের সামনের সড়ক নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২৮ অক্টোবর বিএনপি কার্যালয়ে একাধিক নেতা-কর্মী ও নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। তবে ২৯ অক্টোবর ভোর থেকেই বিএনপি কার্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। কার্যালয়ের সামনের অংশে ‘ক্রাইম সিন’ লেখা হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুই দিন ধরে সেখানে আলামত সংগ্রহ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুই দিন পর দেওয়া হয় কাঁটাতারের বেড়া। সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন তাও সরিয়ে নেওয়া হয়। মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতারা বর্তমানে কারাগারে। দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভিতর থেকে তালাবদ্ধ করে দাঁড়িয়ে আছেন তিনজন নিরাপত্তাকর্মী। এই কার্যালয়ে সামনে নেই পুলিশের কোনো উপস্থিতি। সামনের রাস্তায় ধুলামাখা বেশ কয়েকটি গাড়ি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, নয়াপল্টনে ২৮ অক্টোবরের সংঘাতের পর থেকে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি অফিসের সামনে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ কাজ করছে। পুলিশ তাদের অফিসে তালা দেয়নি। তারা তাদের অফিসে গেলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।