কোরবানির পশুর হাট ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম  বলেছেন, ‌‘সড়ক ও মহাসড়কের পাশে কোরবানির পশুর হাট ইজারা প্রদান করা যাবে না। সড়ক ও মহাসড়কের ওপর বা রাস্তার পাশে যেখানে স্বাভাবিক যান চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে সেখানে কোনোক্রমেই পশুরহাট বসানো যাবে না। এ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, নিদিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির বাস্তবায়ন করা ও কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা সভা শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাটে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। কোরবানির পশুর হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন করতে হবে। রাস্তাঘাট বা পশুরহাটে যাতে কোনো রকম চাঁদাবাজি বা অবৈধ আর্থিক লেনদেন না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ/প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।’

‘এছাড়া বিভিন্ন পশুর হাটে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের সহায়তায় এটিএম বুথ, পয়েন্ট অব সেলস মেশিন, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এর মাধ্যমে ক্যাশলেস বা নগদ টাকাবিহীন লেনদেনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন হাটবাজার ও কোরবানির পশু পরিবহনকালে অজ্ঞান/মলম পার্টি যেন অপরাধমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ তদারকি বাড়াতে হবে।’

নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি নিশ্চিতকরণ বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি নিশ্চিত করতে হবে এবং এ বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ/উৎসাহিত করতে হবে। পশু জবাইয়ের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্থান নির্ধারণ নিশ্চিত করতে হবে। বর্ষাকাল বিবেচনায় সামিয়ানা/ত্রিপল টানানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পশু জবাইয়ের স্থান, ইমাম ও কসাইয়ের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে এবং কসাইদের বিশেষ করে মৌসুমী কসাইদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে দুই সিটি করপোরেশন সফলতার পরিচয় দেবে বলে প্রত্যাশা করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে কোরবানি শুরু হবে। এরপর দিন অর্থাৎ তাদের আগে ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হলেও এবার নির্দিষ্ট করে দিয়েছি সূর্যোদয়ের আগে বর্জ্য অপসারণ করতে হবে। এরপরে যেন কোথাও কোনো রকমের বর্জ্য না দেখি। আমি মনে করি দুই সিটি করপোরেশন সফলতার পরিচয় দেবে। এরপরেও যদি কেউ কোরবানি করে থাকে সেটাও অপসারণ করতে হবে। কেননা ঈদের পর কয়েক দিন পশু কোরবানি হয়ে থাকে। সেজন্য পররের কয়েকদিন একটু বেশি নজর দিতে হবে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে ২৫ লাখ পশু কোরবানি হবে। এত বড় একটা কর্মযজ্ঞে কোথাও যদি একটু সময়ক্ষেপণ হয় সেটা মেনে নেওয়া যায়। এর বেশি হলে সহ্য করা যায় না। ঈদের কয়েকদিন আন্তরিকতার সঙ্গে যারা কাজ করে তাদের একটু আধটু ত্রুটি মেনে নেওয়া যায়। অতীতেও প্রতিকূলতা ছিল তারমধ্যেই কাজ করেছেন। সারা পৃথিবীতেই এটা হয়ে থাকে।

এবছরও কি দুই সিটি কর্পোরেশন পশু কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করে দেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতীতে তারা সামাজিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে করেছে। বিশেষ করে কোভিডের সময়ে করা হয়ছিল। এবার কিছু কিছু এলাকায় সামাজিকভাবে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি করবে। একই সঙ্গে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করবে, সেই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলরা সমাজের লোকজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই ব্যবস্থা করবে।

জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন কি সারাদেশের পশুর হাটগুলোতে থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাল টাকা শনাক্তকরণে যে মেশিন সেটা মোবাইল মেশিন। ফলে সব জায়গায় এ মেশিন থাকবে।

সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আজকে সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আমরা সর্বসম্মতিক্রমে নিয়েছি।

এর মধ্যে রয়েছে গাবতলী ব্রিজের ওপরে চামড়ার বাজার স্থাপন করা যাবে না এবং ময়লার গাড়ি নির্বিঘ্নে আমিন বাজার ল্যান্ডফিলে যাতায়াতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ