১৬ জুলাই, ২০২৪ ২৩:৩০

কোটা আন্দোলন: ইন্ধন দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়

অনলাইন ডেস্ক

কোটা আন্দোলন: ইন্ধন দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়

২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে যারা জলঘোলা করতে চেয়েছিল, নির্বাচনের পরে তারা অনেকটা চুপসে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সেইসময় বাংলাদেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করছিল। কিন্তু সরকারের কূটনৈতিক কৌশলে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সেই নির্বাচনকে মন্দের ভাল হিসেবে মেনে নিয়েছিল। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বললেও বাংলাদেশের নতুন সরকারের সাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল। এখন কোটা বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে কয়েকটি পশ্চিমা দেশের সুস্পষ্ট ইন্ধনের আলামত পাওয়া যাচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো কোটা আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক আন্দোলনের রূপ দিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল গ্রহণ করেছে। কোটা আন্দোলন বিচ্ছিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের কোন আন্দোলন নয়। এটির সঙ্গে রাজনৈতিক মহল যেমন যুক্ত হয়েছে তেমনই আন্তর্জাতিক ইন্ধন রয়েছে বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বিবৃতি থেকেই তার এক একটি প্রমাণ পাওয়া যায়। ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের দুইজন নিহত হয়েছে বলে তথ্য জানিয়েছেন, যা ছিল ডাহা মিথ্যা। 

গতকাল পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। অথচ ম্যাথিউ মিলার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে তিনি দুইজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছেন। এই তথ্য তিনি কোথা থেকে পেয়েছেন? 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস বা অন্য কোনও সূত্র থেকে হয়তো তিনি এই তথ্যটা পেতে পারেন। কিন্তু যে সূত্রই হোক না কেন সেই সূত্রটি বর্তমান সরকার বিরোধী একটি সূত্র এবং তারা সরকারকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে চাপে ফেলার জন্যই এ ধরনের অবাস্তব এবং আজগুবি তথ্য দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর যদি গুজবনির্ভর তথ্যের ভিত্তিতে বিবৃতি দেয় তাহলে বুঝতে হবে যে এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে। 

দুজনের মৃত্যু হয়েছে কি না সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অজানা থাকার কথা নয়। জেনে বুঝেই গুজবকে প্রশ্রয় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণ এবারই প্রথম নয়। এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বরের বিএনপির জনসমাবেশকে নিয়ে একই রকম নাটক করেছিলেন। মায়ের ডাকের গুজবেও কান দিয়ে তিনি বিভ্রান্তিকর বিবৃতি দিয়েছিলেন। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ বিবৃতির পর প্রশ্ন উঠেছে যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা আছে? 

শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করা এবং যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দণ্ডকে সমালোচনা করা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই সব ঘটনা নিয়ে লাগাতার বিবৃতি দিচ্ছে। তথ্য যাচাই বাছাই না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাঁশের কেল্লা এবং স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীর তথ্যের ওপর নির্ভর করে এক ধরনের অসত্য তথ্যের ওপর নির্ভর করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন ধরনের বিবৃতি দিয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এমনিতেই যুদ্ধাপরাধী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে কাজ করে। তারাও কোটা আন্দোলন নিয়ে খনে খনে বিবৃতি দিচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনের আগে যে চক্রটি সরকারকে হঠানোর জন্য এক ধরনের উঠে পড়ে লেগেছিল এবং নানা রকম কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সেই চক্রটি আবার নতুন করে সরকারকে চাপে ফেলার জন্য বিবৃতি বাণিজ্য করছে। এবং গুজবকে প্রাধান্য দিয়ে একটি সমীকরণ টানছে। এটির ফলে সুস্পষ্ট হয়েছে যে, কোটা আন্দোলনের পিছনে একটি মহলের ইন্ধন রয়েছে। এই মহলটি তারাই যারা নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। নির্বাচন নিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল, তারাই এখন কোটা আন্দোলন নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে চায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর