২৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:৩১
কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা

স্বজনদের কাছে হস্তান্তর ৮৫ লাশ

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ২১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বজনদের কাছে হস্তান্তর ৮৫ লাশ

ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন ১ হাজার ৫৬০ জন। ৩৭১ জন ভর্তি হয়েছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এদের মধ্যে চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন ২৫০ জন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৭৫ জন। এসব রোগীর মধ্যে ঢামেক হাসপাতালে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন ৬০ জনকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৩৩ জন। ঢামেক মর্গ কর্তৃপক্ষ মৃতদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে ৮৫ লাশ হস্তান্তর করেছেন। আর বাকি আটজনের লাশের পরিচয় না থাকায় ময়নাতদন্ত করে দাফনের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ময়নাতদন্ত ছাড়াও কিছু লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় আহত হয়ে ১৫ জুলাই ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে টিকিট কাটেন ৩০৬ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় ১৩ জন; ১৬ জুলাই টিকিট কাটেন ১২৯ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় ৯ জন; ১৭ জুলাই টিকিট কাটেন ৬৫ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় ৮ জন; ১৮ জুলাই টিকিট কাটেন ২৭৬ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় ৮৭ জন; ১৯ জুলাই টিকিট কাটেন ৪৮২ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় ১৫৫ জন; ২০ জুলাই টিকিট কাটেন ১৮৯ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় ৭৬ জন; ২১ জুলাই টিকিট কাটেন ৯৩ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় ২০ জন এবং ২২ জুলাই টিকিট কাটেন ২০ জন, এর মধ্যে ভর্তি করা হয় তিনজনকে। 

ঢামেক মর্গ সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই ময়নাতদন্ত হয়েছে চারজনের; ২০ জুলাই ২৪ জনের; ২১ জুলাই ৩৮ জনের; ২২ জুলাই ১০ জনের; ২৩ জুলাই ১২ জনের; ২৪ জুলাই দুজনের এবং গতকাল তিনজনের ঢামেক মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৮ লাশের পরিচয় না থাকায় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে দেওয়া হয়েছে। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ঢামেক হাসপাতালে বর্তমানে ১৭৫ জন চিকিৎসাধীন আছেন। 

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহকারী পরিচালক (গণসংযোগ কর্মকর্তা) মো. রুবেল হোসাইন জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আনসার বাহিনীর একজন সদস্য নিহত ও ৯৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতের নাম মো. জুয়েল শেখ (২২)। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মেগচামীতে। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের মতিঝিল থানায় অঙ্গীভূত আনসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১৬ জুলাই মতিঝিল এলাকায় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। 

র‌্যাব সদর দফতর সূত্র জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় র‌্যাবের শতাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগের নায়েক মো. গিয়াস উদ্দিন নিহতসহ প্রায় ৩ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় টুরিস্ট পুলিশের এ এস আই মো. মোক্তাদির এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জের পরিদর্শক মো. মাসুদ পারভেজ ভুঁইয়া নিহত হয়েছেন।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর