২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:০৬

দক্ষ নাবিক তৈরিতে অন্যতম শীর্ষ দেশ হতে পারে বাংলাদেশ: নৌ উপদেষ্টা

অনলাইন প্রতিবেদক

দক্ষ নাবিক তৈরিতে অন্যতম শীর্ষ দেশ হতে পারে বাংলাদেশ: নৌ উপদেষ্টা

বাংলাদেশ দক্ষ নাবিক তৈরিতে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শীর্ষ স্থান অর্জনকারী দেশ হিসেবে পরিগণিত হওয়ার সক্ষমতা রাখে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। 

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওতে নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক ওয়ার্ড মেরিটাইম ডে- ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে এ কথা বলেন। তিনি জুলাই আগস্ট বিপ্লবে শাহাদাত বরণকারী সকল বীর ছাত্র জনতাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন দূর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলেই আজ দেশকে নতুন করে গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জন্য শুধু বিশেষ একটি দিবসই মেরিটাইম দিবস নয়, প্রতিটি দিনই মেরিটাইম দিবস। আমাদের সামুদ্রিক মানচিত্র অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। আমাদের  রয়েছে বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ নৌপথ, বিশাল বঙ্গোপসাগর এবং অবশ্যই আমাদের রয়েছে  দক্ষ নাবিক। আমাদের  চট্টগ্রাম বন্দরের রয়েছে শত শত বছরের ঐতিহ্য। এক সময় এখানেই নির্মাণ করা হতো পাইরেট শিপ যাকে বর্তমানে স্থানীয়ভাবে বলা হয় সাম্পান। চট্টগ্রামেই পর্তুগিজরা বসতি গড়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দরের পর আরো দুটো সমুদ্র বন্দর যথা মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর  যাত্রা শুরু করে। আমাদের মেরিন একাডেমিগুলো অত্যন্ত আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানের। বাংলাদেশের পাঁচটি মেরিন একাডেমি হতে দক্ষ ও মেধাবী নাবিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানকে আরও কিভাবে উন্নত করা যায়, সেগুলো নিয়ে আমরা প্রতিদিনই কাজ করছি। বাংলাদেশ মেরিনার তৈরিতে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শীর্ষস্থান অর্জনকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পথে বিশেষ কোন বাধা আছে বলে আমি মনে করি না।

উপদেষ্টা আরও বলেন, সাম্পান বা জাহাজ নির্মাণে আমাদের যে ঐতিহ্য রয়েছে তা পুনরুদ্ধারের   জন্য আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি। এছাড়াও মেরিনারদের জন্য দূতাবাসগুলোতে পদসৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি উল্লেখ করেন, আইএমও কর্তৃক সি ক্যাটাগরির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন বাংলাদেশের জন্য মেরিন সেক্টরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। আগামী ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) এর নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করবে।

এসময়ে উপদেষ্টা বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশাংসা করেন। তিনি ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম দিবস উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। 

ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম  দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নেভিগেটিং দ্য ফিউচার: সেফটি ফার্স্ট’ (NAVIGATING THE FUTURE: SAFETY FIRST) প্রতিপাদ্যটি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নৌ নিরাপত্তা সংক্রান্ত মূল কনভেনশন SOLAS 1974 এর ৫০ বছর পূর্তিতে যথার্থভাবে আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তা, সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষা এবং নৌ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আইএমও এর অবদানকে প্রতিফলিত করেছে এবং এই প্রতিপাদ্যটি  জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলমের সভাপতিত্ব নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এ অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মহাসচিবের ধারণকৃত বাণী প্রচার, মূলপ্রবন্ধ ও পেপার প্রেজেন্টেশন, মেরিটাইম সেক্টরে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর