শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

দুদক কর্মকর্তাকে বিচারকের ভৎর্সনা

রাডার ক্রয় দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মনজুর আহমেদকে ভর্ৎসনা করেছেন ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম। গতকাল এরশাদের আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে মনজুর আহমেদ বলেন, 'বিশেষজ্ঞের সংজ্ঞা কী তা আমি জানি না'। তখন বিচারক বলেন, 'আপনি এত গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ এ মামলার আসামি। আপনার বিশেষজ্ঞের সংজ্ঞা বুঝানোর জন্য কি আরেকটি আদালত গঠন করতে হবে।'
আপনাকে তো আর অ, আ, ক, খ পড়ানো যাবে না। এসব প্রাথমিক জিনিস না জেনেই আপনি দুদকের মতো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন?' বিচারক নুরুল ইসলাম বলেন, 'মুখ দিয়ে কথা বের করার আগে চিন্তা করতে হয় আপনি কী বলছেন? যেদিন মামলার শুনানি থাকে সেদিন প্রস্তুতি না নিয়ে কেন আদালতে আসেন? এ ধরনের আচরণ আদালত কখনো প্রত্যাশা করে না। আপনি আপনার জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাডার বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে আপনি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।' রাডার ক্রয় দুর্নীতি মামলায় রাডার বিশেষজ্ঞদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক কর্মকর্তা মনজুর বলেন, 'বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান মো. সদরুদ্দিন, সহকারী বিমান বাহিনীর প্রধান সি এ মান্নান রাডার বিশেষজ্ঞ কি না জানি না। সদরুদ্দিন বিমান বাহিনীর প্রধান হওয়ার কারণে আমি মনে করি তিনি এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।' আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। গত ১১ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তা মনজুর আহমেদ আদালতের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, 'সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদসহ মামলার আসামিরা আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানির নির্মিত হাই পাওয়ার রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিন কোম্পানির রাডার কিনে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছিলেন।' মনজুর এ মামলার এগারোতম সাক্ষী। এ মামলায় আর যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা হলেন_ সাবেক দুদক কর্মকর্তা আলী হায়দার, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক অবসরপ্রাপ্ত মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবদুল মতিন শাহ, অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর মো. সিদ্দিক আলম, সাবেক সুপারিনটেনডেন্ট (এয়ার হেডকোয়ার্টার) মো. শামসুদ্দিন তালুকদার, সাবেক সহকারী (প্রধান কার্যালয়) ফরিদ আহমেদ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক স্টেনোগ্রাফার মো. এরশাদ আলী তালুকদার, একই মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী সচিব মো. আবদুল ওয়াদুদ, বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন এম নূরুল ইসলাম, বিমান বাহিনীর গ্রুপ অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন কামাল আহমেদ, অনুসন্ধান টিমের সদস্য তৎকালীন দুদকের কর্মকর্তা এবিএম নূরুন্নবী। মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ উপস্থিত না থাকলেও তার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দেন। মামলার অন্য আসামি সাবেক সহকারী বিমান বাহিনীর প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সুলতান মাহমুদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আরও এক আসামি একেএম মুসা পলাতক রয়েছেন। এ দুর্নীতি মামলায় ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট এরশাদসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো এরশাদসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরে ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর এ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর