শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

বর্ধমান বিস্ফোরণে জেএমবি জড়িত : বিবৃতিতে এনআইএ

বর্ধমান বিস্ফোরণ ঘটনার নেপথ্যে বাংলাদেশের সন্ত্রাসী সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন জড়িত বলে জানালেন ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। গতকাল এক সংবাদ বিবৃতিতে এনআইএর পক্ষে জানিয়ে দেওয়া হয়, এ বিস্ফোরণ ঘটনায় অভিযুক্তরা ওই সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য। ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে একটি বাড়িতে বিস্ফোরণে শাকিল আহমেদ ও সোবহান মণ্ডল নামে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবদুল হাকিম। ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে দুই মহিলাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে; যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজিয়া বিবি (মৃত শাকিলের স্ত্রী) এবং আমিনা বিবি (আবদুল হাকিমের স্ত্রী)। ধৃতদের জেরা করেই এ বিস্ফোরণ ঘটায় জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন জেএমবির যোগ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
তদন্তে নেমে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণস্থল ও পাশের অঞ্চল থেকে প্রচুর হ্যান্ডগ্রেনেড, বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, নথিপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই জেলারই শিমুলিয়া মাদ্রাসা থেকেও উদ্ধার করা হয় তলোয়ার, ছুরি, এয়ারগানের গুলি, ফোন নম্বর, জিহাদি বক্তব্যসংবলিত ডায়েরি, টেপরেকর্ডার। তদন্তে নেমে এনআইএর গোয়েন্দারা জানতে পারেন খাগড়াগড়ে জেএমবি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি তাদের কাজকর্ম চালাতে প্রচুর রুপি খরচ করত। আর এ রুপি বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে অসম হয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসত। তারপর তা লাগানো হতো বিস্ফোরক তৈরির কাজে। এরপর সেই বিস্ফোরক চোরাপথে বাংলাদেশে পাঠানো হতো। গোয়েন্দারা এও জানতে পেরেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের মাটিতে নাশকতা সৃষ্টি করা এবং সে দেশের বর্তমান সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতেও ছক কষা হয়েছিল। একই সঙ্গে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে বিস্ফোরণ ঘটানোও তাদের লক্ষ্য ছিল।
ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে গতকাল বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনে আসেন এনআইএর মহাপরিচালক (ডিজি) শরদকুমার। বেলা ১১টা নাগাদ তিনি কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে যান বর্ধমানে। প্রথমে তিনি জেলা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার পর খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণস্থলটি পরিদর্শনে যান। শরদকুমারের সঙ্গে ছিলেন এনআইএর আইজি সঞ্জীবকুমার সিং ও এসপি বিক্রম খারাটে। প্রায় ১৫ মিনিট সেখানে কাটিয়ে বাদশাহি রোডে অবস্থিত ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি শেখ রেজাউলের বাড়িতে যান তিনি। ওই জেলারই শিমুলিয়া মাদ্রাসাও পরিদর্শন করেন তারা। বর্ধমানের পরই তারা উড়ে যান মুর্শিদাবাদ জেলায়। সেখানে মৃত শাকিল গাজির ভাড়া বাড়িটি পরিদর্শন করেন। ‘বোরখা হাউজ’ নামে শাকিলের একটি দোকানও ঘুরে দেখেন শরদকুমার। বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করে গতকাল সন্ধ্যায় কলকাতায় তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক সেরে কেন্দ্রকে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠান শরদকুমার। কেন্দ্রকে পাঠানো সেই রিপোর্টে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর