মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

এমপি মারলেন প্রকৌশলীকে

বরগুনা-১ আসনের (সদর-বরগুনা) সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)  নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মালেককে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এমপি শম্ভু অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাহী প্রকৌশলী বিধিবহির্ভূতভাবে কয়েক কিলোমিটার রাস্তায় বন বিভাগের গাছ দালালদের সঙ্গে কেটে নিয়েছে। এ জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে বকাঝকা করেছি।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স উপলক্ষে রবিবার দুপুরে বরগুনার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আগাম মহড়ার আয়োজন করা হয়। এতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জেলার অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ থেকে অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাউবোর বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মালেক জেলা প্রশাসকের কক্ষে যাওয়ার সময় এমপি শম্ভুর সামনে পড়লে আকস্মিকভাবে তিনি তার ওপর চড়াও হন। এমপি উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকেন, ‘লাঠি  কোথায়? ওকে (নির্বাহী প্রকৌশলী) লাঠিপেটা করব।’
 ঘটনার আকস্মিকতায় সেখানে উপস্থিত জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হতভম্ব হয়ে যান। এরপর জেলা প্রশাসকের কক্ষে ঢোকেন এমপি এবং প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের মহড়ায় যোগ দেন।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মালেক বলেন, ‘রবিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে এমপি শম্ভু আমাকে ফোন করে জেলার আমতলী উপজেলায় সেকান্দারখালী এলাকায় বাঁধের গাছ কাটার কথা জানান। বেলা ১১টার দিকে পুনরায় তিনি ফোন করলে আমি তাকে বলি, স্যার, সেখানে লোক পাঠিয়েছি। খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাচ্ছি। এ কথা বলার পরপরই এমপি কিছুটা রাগান্বিত হয়ে আমার ফোন রেখে দেন। পরে আমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেলিকনফারেন্স উপলক্ষে আগাম মহড়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সেখানে আমাকে তিনি কিল-ঘুষি মারেন। আমি বিষয়টি মাননীয় পানিসম্পদমন্ত্রী, পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিশ্বব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
আবদুল মালেক আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাঁধ সংস্কারের জন্য গাছ কেটেছে এ জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ মামলা করতে পারে। এ জন্য এমপি সাহেব আমাকে মারবেন, এটা তো ইস্যু হতে পারে না।’ তাহলে ইস্যুটা কী-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইস্যুটা হচ্ছে, বরগুনা জেলায় সোয়া ২০০ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। এর একটা অংশ তারা পাবেন না! এটাই হলো ইস্যু। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ উপস্থিত কর্মকর্তারা এ সময় নীরবতা পালন করেন।’

সর্বশেষ খবর