বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সরকারের ‘জেদি’ কর্মকাণ্ড দেশবাসী মানবে না  

সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা

ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

সুন্দরবন বিধ্বংসী সব প্রকল্প বাতিল এবং প্রাণবৈচিত্র্য-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষার দাবি জানিয়ে দেশের দুটি বামপন্থি দলের নেতারা বলেছেন, সরকারের ‘জেদি’ কর্মকাণ্ড দেশবাসী মেনে নেবে না। গতকাল ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জে সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা কর্মসূচির সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) শীর্ষ নেতারা আরও বলেছেন, সুন্দরবন ধ্বংস করে দেশি-বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষা করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ আÍঘাতী। সরকারকে অবশ্যই এ আÍঘাতী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

গতকাল বিকালে ফরিদপুরের আলীপুর ইমাম উদ্দিন স্কয়ার ও মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত দুটি পৃথক সমাবেশে এসব কথা বলেন সিপিবি উপদেষ্টা মনজুুরুল আহসান খান ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ভূইয়া। এতে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি ফরিদপুর জেলা কমিটির সভাপতি কানাইলাল গাঙ্গুলী ও মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আজহারুল ইসলাম আরজু। এ ছাড়াও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে সংক্ষিপ সমাবেশ করে এ দল দুটি। সমাবেশগুলোতে আরও বক্তব্য দেন সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, জলি তালুকদার, সিপিবির রাজবাড়ী জেলা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম, কেন্দ্রীয় নেতা কাফি রতন, বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ প্রমুখ। 

সিপিবি-বাসদের সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা সমাবেশে কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, ভারতের মধ্যপ্রদেশে নরসিংহপুর জেলায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কৃষি ও পরিবেশগত সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে ভারত সরকার ওই প্রকল্পটি বাতিল করে। ভারতের কেন্দ্রীয় গ্রিন প্যানেল বলেছে, জনবসতির কাছে ও কৃষিজমির ওপর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ সুন্দরবনে কৃষিজমি ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এ উদ্যোগ কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, সিপিবি সবসময় দেশের স্বার্থে কথা বলে এবং মানুষের অধিকারের পক্ষে সংগ্রাম করে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ১৯৭২ সালে ইরানের রামসার শহরে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য ১৬০টি দেশ একটি দলিলে স্বাক্ষর করে। প্রাকৃতিক জলাভূমি হিসেবে সুন্দরবন রামসার এলাকা হিসেবে ঘোষিত। রামসার কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সুন্দরবন নিয়ে সবার উদ্বেগ আছে। কিন্তু উদ্বেগ নেই শুধু লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষাকারী সরকারের।

এর আগে গতকাল সকালে সিপিবি-বাসদের সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়। পরে মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে সমাবেশ শেষ করে বিকালে ফরিদপুর পৌঁছায়। গত ১৩ অক্টোবর শুরু হওয়া সিপিবি-বাসদের এই অভিযাত্রা আগামী ১৭ অক্টোবর, বাগেরহাটের কাটাখালীতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর