সোমবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মগবাজারে পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মগবাজার এলাকায় শামসুল হক মৃত্যুর ঘটনায় এক দিন পেরিয়ে গেলেও থানায় কোনো মামলা হয়নি। যদিও নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার ইমাম হাসানের নির্দেশে পুলিশের সহায়তায় শামসুলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি। পুলিশের দাবি, পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছে শামছুল হকের।

নিহতের স্বজনরা জানান, জমিজমা-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শনিবার দিবাগত রাতে দোকানের ভাড়াটিয়া শহীদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা পিটিয়ে হত্যা করে শামসুলকে। পিটিয়ে মারার নেতৃত্ব দানকারী শহীদুল ডিএমপির উপকমিশনার (ডিসি, লজিস্টিক অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) ইমাম হাসানের ভাই।

 

নিহতের ভাই ফালান মিয়া জানান, অনেক দিন আগে ১৪৮/১ নয়াটোলা হোল্ডিংয়ে তারা চার কাঠা জমি কেনেন। সেখানে তারা ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। বাসার সামনে একটি দোকানঘর করেন। দোকানটি দুই বছর আগে ডিসি ইমামের ভাই শহীদুলের কাছে দুই লাখ টাকা অগ্রিম ও মাসিক চার হাজার টাকায় ভাড়া দেন। অগ্রিমের এক লাখ ১২ হাজার টাকা দিয়ে দেন শহীদুল। আর বাকি ৮৮ হাজার টাকার চেক দেন। তবে চেকটি ডিজঅনার হয়। এ ব্যাপারে রমনা থানায় একটি জিডি করা হয়। পরবর্তী সময়ে অগ্রিম টাকা ও ভাড়ার জন্য বললে পুলিশের ভয় দেখান শহীদুল। সম্প্রতি শহীদুল দোকানসহ নিহত শামসুলের চার কাঠা জমির মালিকানাও দাবি করেন। জমি দখল করতে ভয়ভীতি দেখান তিনি। তাদের বিরুদ্ধে দোকানে চুরির মামলা দিয়ে হয়রানি করেন শহীদুল। পুলিশের বড় কর্তার ভয়ে তারা কারও কাছে অভিযোগও করতে পারেননি।

নিহতের ছেলে বেলাল হোসেন শুভ জানান, তাদের নামে জমির নামজারি রয়েছে। তারা খাজনাও প্রদান করছেন। হঠাৎ করে দোকানের ভাড়াটিয়া জমির মালিকানা দাবি করেন। ভাড়াটিয়ার ভাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেননি। পুলিশের ভয় দেখিয়ে শহীদুল তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

তবে ডিসি ইমাম হাসান বলেন, ‘শামসুল মারা যাওয়ার পরপরই তার ছেলে শুভ আমার ভাই শহীদুলকে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা দিতে বলে। নইলে মামলায় ফাঁসিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। শুভ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।’ তিনি বলেন, ‘শামসুলকে আমরা টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করেছি তার অসুস্থতার সময়। এ বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই বিরক্ত।’

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, শহীদুল ইসলাম ও শামছুল হকের মধ্যে জমিজমা-সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। শহীদুল ডিএমপির ডিসি ইমাম হোসেনের ভাই। তবে বিরোধটি কিছুদিন আগে নিষ্পত্তি হয়। তিনি জানান, শনিবার রাতে পুলিশের একটি টহল ডিউটি ওই এলাকায় ছিল। তবে পুলিশ তার বাসায় কিংবা তাকে ধরতে যায়নি। নিয়মিত ডিউটি হিসেবে তারা কাজ করছিল। পুলিশ আসছে এমন খবর শুনে শামছুল হক পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে কাঠের সঙ্গে মাথায় আঘাত লাগে তার। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে শামসুল মারা যান।

সর্বশেষ খবর