মঙ্গলবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

যে কোনো পরিস্থিতিতে প্রস্তুত র‌্যাব : বেনজীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

শারদীয় দুর্গাপূজা ও পবিত্র আশুরা উপলক্ষে যে কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‌্যাব প্রস্তুত। শনিবার থেকে দেশব্যাপী ২৮ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জন শেষ না হওয়া পর্যন্ত র‌্যাব মাঠে সক্রিয় থাকবে। পোশাকে, সাদা পোশাকে বিপুলসংখ্যাক র‌্যাব সদস্য পূজামণ্ডপের দায়িত্ব পালন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের নিরাপত্তা দেবেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। গতকাল দুপুরে বনানী মাঠে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বেনজীর আহমেদ বলেন, র‌্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে গোয়েন্দা সরঞ্জাম ব্যবহার করছে। বম্ব ডিসপোজাল ও ডগ স্কোয়াড ইউনিটের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণ করবে র‌্যাব। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে র‌্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স সার্বক্ষণিক স্ট্যান্ডবাই থাকবে। তিনি বলেন, ‘পূজামণ্ডপ ঘিরে নিরাপত্তা-বলয় তৈরি করা হয়েছে, যাতে সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালন করতে পারেন। আমরা নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে সবকিছু বলতে চাই না। নিরাপত্তার বিষয়গুলো প্রকাশ করে দিলে অপরাধীরা ফাঁকফোকর খুঁজে আপরাধ করার চেষ্টা করবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব সদর দফতর সার্বক্ষণিক বিষয়গুলো মনিটর করবে। সবার সামগ্রিক প্রচেষ্টায় ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড প্রতিহত করা হবে।’

পূজামণ্ডপে আগত বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা বিষয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘দুজন বিদেশি মেহমানকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর তদন্ত চলছে। আমাদের কাছে দেশি বা বিদেশি নাগরিক যিনিই হোন, প্রতিটি জীবনই মূল্যবান। আমারা সবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব।’ পূজা কেন্দ্রের হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও সব হুমকির বিষয় সব সময় বিশেষ বিবেচনায় রাখি। সেগুলো মোকাবিলায় আমাদের যে কোনো পরিকল্পনা পরিবর্তন করি।’

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘১৯ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গোৎসব পালিত হবে। ২৪ অক্টোবর পবিত্র আশুরা। আশুরা ও বিসর্জন এবার একসঙ্গে হচ্ছে। অতীতে আমরা একসঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে করতে সক্ষম হয়েছি। কারণ এ দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য উদাহরণ। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শৃঙ্খলার সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সব উৎসব পালিত হবে।’

এদিকে দুপুরে একই স্থানে এক সংবাদ সম্মেলনে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদের সভাপতি সুভাষ সি ঘোষ বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে বনানী মাঠে শারদীয় দুর্গাপূজা পালন করে আসছি। প্রতিবছরের মতো এবারও পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব চলবে। সাম্প্রতিক সময়ের কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এ স্থানকে হাই অ্যালার্ট সিকিউরিটি জোন হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পুরো অনুষ্ঠানটি সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। র‌্যাব-পুলিশ আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে সহযোগিতা করছেন।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, রাজধানীর সাতটি পূজামণ্ডপের মধ্যে বনানীর একটি। তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। ডিএমপির ট্রাফিক দক্ষিণ ডিসি প্রবীর কুমার রায় সবাইকে ট্রাফিক নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর