অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা হলে সরকারি চাকুরেদের কারোরই সুযোগ-সুবিধা কমবে না। তবে আরও ভালো কিছু করার সুযোগ রয়েছে। সেটা করাই সরকারের উদ্দেশ্য। গতকাল নিজ দফতরে বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। পদাধিকার বলে তিনি এ কমিটির আ য়ক। অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তৃতীয়, দ্বিতীয় ও প্রথম ধাপেও কীভাবে বেতন-ভাতা দেওয়া যায়, সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভা কমিটিতে সবার অভিমত হচ্ছে, ইতিবাচক সমাধান দরকার। চলতি সপ্তাহের মধ্যে নতুন বেতন কাঠামোর খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার (ভেটিং) জন্য পাঠানো হবে। ভেটিং শেষে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফেরত আসবে। তখন তা পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, নতুন কাঠামোতে ব্যাপকভাবে বেতন-ভাতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যারা এত দিন যেসব সুবিধা পেয়ে আসছেন, তার চেয়েও বেশি দেওয়া। কমানোর কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। বেতন কমিশনের প্রতিবেদন, সচিব কমিটির প্রতিবেদন ও মন্ত্রিসভা কোথাও সুযোগ-সুবিধা কমানোর কথা বলা হয়নি। সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল থাকছেই না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১০ বছর পর কর্মচারীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে একধাপ ওপরের বেতন-ভাতা পাবেন। ১৫ বছর পর আবার আরেক ধাপ ওপরে বেতন-ভাতা পাবেন। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শফিউল আলম, অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর সামরিক ও বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামোর অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। নতুন বেতন কাঠামোতে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে প্রতি বছর বেতন বৃদ্ধির নতুন পদ্ধতি চালু করার কথা বলা হয়েছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের খবর শোনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুলের শিক্ষক ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। তাদের অভিযোগ, নিচের দিকে পদোন্নতি কম হয়, এ দুটি বিষয় বাদ দেওয়া হলে নিচের দিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রীকে আহŸায়ক করে বেতন বৈষম্য নিরসন কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। কমিটিতে শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, জনপ্রশাসন মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী এবং অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এ কমিটিকে জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনিষ্পন্ন মামলাসমূহ পর্যালোচনা ও বেতন স্কেলে অভিযোগের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে। অর্থ বিভাগ এই কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।