রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
সরকারের উদ্দেশে রব

সংলাপে বসে ঐকমত্য ছাড়া জঙ্গি দমন করা যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, সংলাপে বসে ঐকমত্যে আসা ছাড়া জঙ্গি দমন করা যাবে না।

তিনি গতকাল দুপুরে যশোর জেলা জেএসডির কাউন্সিলে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। যশোর প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ কাউন্সিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। জেলা জেএসডি সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় নেতা এম এ গোফরান, ফকির শওকত, এম এ মান্নান, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান হাসান প্রমুখ। আ স ম রব বলেন, সরকার বলে, বিএনপির সময় নাকি জঙ্গির উত্থান হয়েছিল। এখন কী অবস্থা! তিনি প্রধানমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, আপনার আমলে জঙ্গির উত্থান নয়, উচ্ছ্বাস হচ্ছে। একা প্রতিরোধ করতে পারবেন না। আমরাও ’৭১ সালে একা পারতাম না। জনগণ যদি আমাদের বিপক্ষে থাকত, ভারতের মাটি থেকে হাজার বছর ধরে যুদ্ধ করেও এ দেশ স্বাধীন করতে পারতাম না। তিনি বলেন, ‘সমঝোতা করুন। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে যারা আছে তাদের বাদ দিয়ে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে সংলাপে বসে আলোচনা করুন কীভাবে জঙ্গি ঠেকাতে হবে ঐকমত্যে পৌঁছান। এ ছাড়া পারবেন না।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে আ স ম রব বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতীক কী, শিক্ষকদের প্রতীক কী, কৃষক, ডাক্তার, বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী, কবির প্রতীক কী। তারা কীভাবে ভোট করবে, কোথায় পাবে হেলিকপ্টার। কী বিপদ ডেকে আনছেন জানেন। আপনি একজনকে নমিনেশন দেবেন। আপনার দল থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হবে একশ’ জন। সারা দেশে গ্রামগঞ্জে খুনোখুনি রক্তারক্তি হবে, বাড়ি-ঘর-দুয়ার কিছু থাকবে না। জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে তছনছ হয়ে যাবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ আখ্যা দিয়ে জেএসডি সভাপতি বলেন, যশোরে চার পারসেন্ট লোক ভোট দিতে যায়নি জানুয়ারি মাসে, কিন্তু সিইসি বললেন ৪০ পারসেন্ট ভোট দিয়েছে। ছি! একটা নির্লজ্জ বেহায়া লোক। একটা ছাগলের বাচ্চা।’

রব বলেন, ‘এটা আমার দেশ না, আমি মুক্তিযুদ্ধ করিনি। আপনারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের কথা বলছি। যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের কথা বলছি। কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন? কোথায় ট্যাংক-বিমান চালিয়েছেন? যশোর ক্যান্টনমেন্ট যখন দখল করে নিচ্ছে, তখন তারা কোথায় ছিলেন?

জেএসডি সভাপতি রব আরও বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে লেখা আছে, এ রাষ্ট্রের মালিক হলো জনগণ। থুঃ। এরচেয়ে মিথ্যা কথা... পুড়ায়ে ফেলেন বইটা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার একবিন্দু মালিকানাও একটা মানুষের নেই। পাইছেন কেউ মালিকানা?’ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনার নির্বাচনী ইশতেহার আমার কাছে আছে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন। ৫ বছরের মধ্যে ছনের ঘর থাকবে না। বিদ্যুৎ দেবেন। আপনি এখন ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে, মেগা সি-পোর্ট, পদ্মা সেতু বানাচ্ছেন। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের কানেকটিভিটি দিচ্ছেন। আপনার এই উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই, প্রশংসা করি। কিন্তু পেটে ভাত না দিয়ে মাথায় তেল দিলে তো কেউ খুশি হবে না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনি আমার হাঁটার রাস্তা দিতে পারছেন না, প্লেন তৈরি করছেন। আমারে হাঁটতে দেন, চলতে দেন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে কাজ করে খেতে দেন।’

সর্বশেষ খবর