বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

সমুদ্রবন্দরে বিনিয়োগ করতে চায় ইরান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে মহাসড়কের মতো অবকাঠামো তৈরি, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ঢাকা সফররত ইরানের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, কৃষিজাত পণ্য নেওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি তেলসহ উত্পাদিত পণ্য প্রতিযোগিতামূলক দামে রপ্তানি করতে চান তারা। ইরানের ওপর থেকে দীর্ঘ এক যুগ পর ইউরোপ ও আমেরিকা অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়। এ অবস্থায় তেলসমৃদ্ধ এ দেশটি দ্রুত ব্যবসা সম্প্রসারণে বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। গতকাল মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআই আয়োজিত বৈঠকে অংশ নেওয়া ইরানের উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের নেতারা এমন আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

 এফবিসিসিআইর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইরানের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের প্রধান দেশটির ট্রেড প্রমোশন সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং শিল্প, খনিজ ও বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রীর উপদেষ্টা মোহাম্মদ রেজা মওদুদি। আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজি।

রেজা মওদুদি বলেন, বাংলাদেশকে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য আমাদের চেয়ে বেশি সুবিধায় অন্য কেউ দিতে পারবে না। তাই আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি ও গভীর বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাই। আমারা কী রপ্তানি করতে পারি আর আপনাদের কাছ থেকে কী ধরনের পণ্য নিতে পারি, এ জন্য ‘বাংলাদেশ-ইরান যৌথ কমিটি’ গঠন করা যেতে পারে। এ কমিটি সেসব পণ্য চিহ্নিত করবে। এ লক্ষ্যে উভয় দেশেই অফিস খোলা যেতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশের কোন কোন খাতে বিনিয়োগ করা যায় তা-ও চিহ্নিত করা যেতে পারে। ঢাকাস্থ ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজি বলেন, বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনে বাংলাদেশকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এফবিসিসিআইর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহবুবুল আলম বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরে বলেন, আপনারা সঠিক সময়েই বাংলাদেশ সফর করলেন। বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘উদার নীতি’ অনুসরণ করে। সেই সঙ্গে এখানে বিনিয়োগ সবচেয়ে নিরাপদও। বাংলাদেশে পরিবহনশিল্প, জ্বালানি তেল, অবকাঠামো ও নির্মাণসামগ্রী, চামড়া, কৃষি ও পর্যটন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। এ লক্ষ্যে নিয়মিত তথ্য আদান-প্রদান, ঢাকা ও তেহরানে একক দেশের পণ্যের প্রদর্শনী, কারিগরি সহযোগিতা ও বাংলাদেশ-ইরান বিজনেস কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। প্রসঙ্গত, ১২ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আমেরিকা ও ইউরোপ অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করলে তেলসমৃদ্ধ ইরান কিছুটা বেকায়দায় পড়ে। তাদের প্রধান অর্থনৈতিক সম্পদ তেল রপ্তানিতে ধস নামে। তবে সম্প্রতি ওই অবরোধ তুলে নেওয়ার ঘোষণার পর ফের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিজেদের অবস্থান বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

সর্বশেষ খবর