বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুন্দরবনের বাঘ রক্ষার এখনই উপযুক্ত সময় : বার্নিকাট

বাগেরহাট প্রতিনিধি

মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, বাংলাদেশের সুন্দরবনের বাঘ বাঁচানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র এ দেশের সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সুন্দরবনই হচ্ছে বেঙ্গল টাইগারের একমাত্র বাসস্থান। এখানকার বাঘ বাঁচানোর জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় জাতীয় সংলাপের উদ্বোধনী দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে গতকাল তিনি এসব কথা বলেন। ইউএসএআইডির বাঘ প্রকল্পের সুন্দরবনে পর্যটন জাহাজ ‘টাঙ্গুয়ার হাওর’-এ দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এ সংলাপ আজ শেষ হবে। সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. ইয়াহিয়া চৌধুরী এমপি, প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী, ইউএসএআইডির বাঘ প্রকল্পের দলনেতা গ্যারি কলিন্স প্রমুখ।

রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, ‘সুন্দরবনের বাঘের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়িয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের সুন্দরবনে একশর বেশি বাঘ রয়েছে। বিষয়টি সমন্বিত পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ দেশের জাতীয় সৌন্দর্যের প্রতীক বাঘ বাঁচাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের যুক্ত করতে হবে। এ কাজে এখানকার সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। এ ক্ষেত্রে আমাদের সফলতা হচ্ছে, বাঘ রক্ষায় সম্পৃক্তদের এক জায়গায় আনতে সক্ষম হয়েছি।’ এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে স্বচ্ছ নির্বাচনের পরিবেশ ও গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ দেশে নির্বাচনকালীন সহিংসতা কমে আসায় আমরা সন্তুষ্ট। এটি ইতিবাচকও।’ প্রধান আতিথি পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘সরকার সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় আগে থেকেই কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে চলমান তিন ধাপের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় সুন্দরবনের বাঘ রক্ষা পাবে। কোস্টগার্ড, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ প্রশাসনের বিভিন্ন শাখাকে সমন্বয় করে সুন্দরবন সুরক্ষায় আমরা ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সুন্দরবন রক্ষার ক্ষেত্রে সফল হতেই হবে। সুন্দরবনে এখন আর আগের মতো সম্পদ ধ্বংস হয় না। গাছ কাটা বন্ধ হয়েছে। গোলপাতা আহরণ ও মাছধরা সীমিত করা হয়েছে। মাছ আহরণ বন্ধেরও চিন্তাভাবনা চলছে। একসময় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জ্বালানি কাঠের উৎস ছিল সুন্দরবন। এখন আর তা নেই। মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে।’

ইউএসএআইডির বাঘ রক্ষা প্রকল্পের এই জাতীয় সংলাপে অংশ নেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বন অধিদফতর, পরিবেশ অধিদফতর, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, পুলিশ ও বিচার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। দুই দিনব্যাপী সুন্দরবনে অনুষ্ঠিত বাঘ রক্ষা প্রকল্পের এই জাতীয় সংলাপে বাঘের আবাসস্থল, খাদ্যাভ্যাস, প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি, বাঘসহ সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী পাচার রোধ, বাঘ রক্ষায় টহল জোরদার, টহল টিমের প্রশিক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, জিপিএস ডাটাবেজ তৈরি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর