শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
সরেজমিন

একই মুখ-একই লোক ঠায় দাঁড়িয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

একই মুখ, একই লোক ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনুসন্ধিত্সু না হলে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই— কেন্দ্র দখল ও ব্যালট পেপারে একচেটিয়া জাল ভোট প্রয়োগের এই কৌশল। সীতাকুণ্ড উপজেলার চার ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র। সকাল ১০টার দিকে সংবাদকর্মীরা যখন উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ঘোড়ামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান, তখন হঠাৎ করেই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে যান একদল লোক। ঘণ্টা দুয়েক পর আবারও ওই কেন্দ্রে গেলে ভোটের লাইনে সেই মুখগুলোকেই দেখা যায়। গলায় তখন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ছবি সংবলিত কার্ড। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ইস্কান্দার হোসেন বললেন, তার কেন্দ্রের ৩ হাজার ২০০ ভোটের মধ্যে বেলা ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট গ্রহণ হয়ে গেছে। তবে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা সোনাইছড়ির বিভিন্ন কেন্দ্র ‘দখল করে’ জাল ভোট দিচ্ছে— বলে অভিযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী নুরুদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর চৌধুরী।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। লাইনের কয়েকজন জানান, অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও তাদের ভোট দিতে ভিতরে ডাকা হচ্ছে না। ওই কেন্দ্রের কয়েকটি কক্ষের বাইরে দেখা যায় একইভাবে নারী ভোটাররা দাঁড়িয়ে আছেন। অবশ্য আওয়ামী লীগের এক চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির আহমেদ বলেন, ‘এখানে কোনো সমস্যা নেই, সুষ্ঠুভাবে ভোট চলছে। কোনো ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না।’

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানান, দিনের বেলা ১টার দিকে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের বাড়বকুণ্ড উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি বুথে গিয়ে দেখা যায়, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা বসে আছেন অথচ ব্যালট বাক্স প্রায় ভর্তি। সংবাদ কর্মীদের প্রবেশ করতে দেখে ব্যালটে সিল মারতে থাকা কয়েকজন দ্রুত ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এর আগেই ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে দেন। ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কুমিরা ইউনিয়নের বিএনপির প্রার্থী হেলাল উদ্দিনও। জাকিয়া বেগম নামে একজন নারী বলেন, সকাল ৮টা থেকে দাঁড়িয়েও বুথে ঢুকতে পারেননি তিনি। নৌকা প্রতীকের লোকজন বাড়ি যেতেও দিচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর