মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

সাত খুনে ম্যাজিস্ট্রেটসহ সাত সাক্ষীকে জেরা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সাত খুন ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিনসহ সাত সাক্ষীকে জেরা করেছেন আসামি তারেক সাঈদ ও নুর হোসেনের আইনজীবী। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে গ্রেফতার ২৩ আসামির উপস্থিতিতে জেরা শুরু হয়। দুপুর ১টায় জেরা শেষ হলে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৮ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। কে এম মহিউদ্দিন ১৬৪ ধারায় তারেক সাঈদ, রানাসহ সাত আসামি ও তিন সাক্ষীর জবানবন্দি ঘটনার পর পৃথক সময়ে গ্রহণ করেন। এ বিষয়ে তিনিসহ এসআই বেলায়েত হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, ফখরুল ইসলাম, রমজান আদালতে আগে সাক্ষ্য এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরার উত্তর দিয়েছেন। তবে তারেক সাঈদ ও নূর হোসেনের পক্ষে সাত খুনের মামলা খারিজের আবেদন করেন হাইকোর্টে। এজন্য বিভিন্ন সময় ষষ্ঠবার সাক্ষীদের জেরা করার সময় আবেদন করেন ওই দুজনের পক্ষের আইনজীবী। পরে হাইকোর্ট তাদের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর পর থেকে যতজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে তাদের জেরা করার আবেদন করলে আদালত ওই সাক্ষীদের পুনরায় আদালতে হাজির থাকার সমন দেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুন মামলার আদালতের নির্ধারিত সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আজ (গতকাল) সাত সাক্ষীকে দুই আসামির আইনজীবী জেরা করেছেন। কার্যক্রম চলছে। সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ নির্ধারণ করেছেন আগামী সোমবার। জানা গেছে, সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটির বাদী বিজয়কুমার পাল হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা ও অন্য বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী। দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী হলেন ১২৭ জন করে। এ কারণে উভয় মামলার সাক্ষীদের একই সঙ্গে দুই মামলায় জেরা করা হয়। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দনকুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে পাঁচ আসামিকে বাদ দেওয়ায় এবং প্রধান আসামি নূর হোসেনের জবানবন্দি ছাড়া অভিযোগপত্র আদালত আমলে নেওয়ায় ‘নারাজি’ আবেদন করেন সেলিনা ইসলাম বিউটি। আবেদনটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জজ আদালতে খারিজ হয়ে গেলে বিউটি উচ্চ আদালতে যান। হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, পুলিশ চাইলে মামলাটির ‘অধিকতর তদন্ত’ করতে পারে এবং ‘হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার’ ধারা যুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে ১২ জন এখনো পলাতক।

সর্বশেষ খবর