রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
কলেজছাত্রী আফসানা হত্যাকাণ্ড

জড়িতরা শনাক্ত তবু অধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুরে কলেজছাত্রী আফসানা ফেরদৌস হত্যাকাণ্ড তদন্তে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই। তবে পুলিশের দাবি, জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে কিন্তু তারা অধরা। তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। আফসানার বড় ভাই ফজলে রাব্বী জানান, দুই দিন আগে ঘটনাটি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে তার মা সৈয়দা ইয়াসমিনকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়েছে অপরিচিত কয়েকজন। এরপর তার মা মানসিক ও শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মামলার তদন্ত নিয়ে পুলিশের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি নিয়ে তারা দু-এক দিনের মধ্যে আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলে জানান। সাইক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের স্থাপত্যবিদ্যার শেষ বর্ষের ছাত্রী আফসানা ফেরদৌসের মৃত্যুর ঘটনায় ১৪ আগস্ট কাফরুল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য হাবিবুর রহমান রবিনসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তারা সন্দেহের তালিকায় রয়েছে। আর তাদের গ্রেফতার করতে পারলে সব ধোঁয়াশার অবসান হবে।

এদিকে আফসানা হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতা-কর্মীরা। গতকাল দুপুরে কলেজের প্রধান ফটক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রশাসন ও সরকার যদি তনু হত্যা, মিতু হত্যায় জড়িতদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করত, তাহলে আজ আফসানাকে অকালে জীবন দিতে হতো না। তারা অভিযোগ করেন, তেজগাঁও কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন হত্যার সঙ্গে জড়িত। অথচ প্রশাসন সঠিক তদন্ত না করে এ হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে যাচ্ছে। আফসানা হত্যায় জড়িত অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করে বিচার মুখোমুখি করার দাবি জানান তারা। এ ছাড়া প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে হত্যাকারীদের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। অভিযুক্ত রবিনের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘সে ছাত্রলীগের কেউ না।’ উল্টো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘তাকে তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ কে দিয়েছে?’  এ বিষয়ে মিরপুর বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পেরেছি। তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা যাবে না। অল্প দিনের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে পারব বলে আশা করছি।’ কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি আছে। আমরা কয়েক দিনের মধ্যে আসামি গ্রেফতার করতে পারব বলে আশা করছি। এ জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।’ প্রসঙ্গত, ১৩ আগস্ট রাতে আফসানার লাশ মিরপুরের আল-হেলাল হাসপাতালের সামনে রেখে পালিয়ে যায় দুই যুবক। পরে অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে রুহিয়া উপজেলায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর