মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া পাটুরিয়ায় দুর্ভোগ

প্রতিদিন ডেস্ক

ঘন কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে রবিবার মধ্যরাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত তিন দফায় প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় মাঝনদীতে সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে সাতটি ফেরি আটকে থাকে। উভয় ঘাটে আটকা পড়ে কয়েকশ গাড়ি। দুর্ভোগে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, রবিবার মধ্যরাত থেকে নদীতে কুয়াশা পড়তে থাকলে ফেরি, লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় ফেরি চালানো বন্ধ রাখা হয়। এ সময় উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো  ফেরি কেরামত আলী, আমানত শাহ, এনায়েতপুরী, খানজাহান আলী এবং কে টাইপ কুমারী ও ইউটিলিটি শাপলা শালুক ও বনলতা নামের সাতটি ফেরি মাঝনদীতে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। এসব ফেরিতে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী বোঝাই ৪০টির মতো দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী ১৮টি ট্রাক ও ১৪টি প্রাইভেট গাড়ি ছিল। এ ছাড়া দৌলতদিয়া ঘাটে রো রো ফেরি শাহ জালাল, ভাষাসৈনিক গোলাম মওলা, কে টাইপ কাবেরী, ইউটিলিটি হাসনা হেনা, চন্দ্র মল্লিকা ও রজনীগন্ধা এবং পাটুরিয়া ঘাটে রো রো বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, কে-টাইপ কপোতী ও মাধবীলতা নোঙর করে ছিল। রাত পৌনে তিনটার দিকে কুয়াশা কমে আসায় ফেরি ছাড়তে শুরু করে। দ্বিতীয় দফায় ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা এবং তৃতীয় দফায় সকাল ১০টার দিকে ফের বন্ধ হওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর সাড়ে ১০টার দিকে চালু হয়। তিন দফায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার  বেশি সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে আটকা পড়ে আট শতাধিক গাড়ি। গতকাল বেলা ১১টায় দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে দুই কিলোমিটারের বেশি লম্বা দুই সারি কোথাও বা তিন সারি যাত্রীবাহী বাস, পশুবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য গাড়ি নদী পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে ৩৮ জন যাত্রী নিয়ে রবিবার রাত ১২টার দিকে ঘাটের লম্বা লাইনে আটকা পড়েন সাকুরা পরিবহনের চালক বাদশা মিয়া। তিনি জানান, প্রায় ২২ ঘণ্টা পার হলেও এখনো ফেরির দেখা পাইনি। অনেক যাত্রী অসুস্থ ও বিরক্ত হয়ে সকালে বিকল্প উপায়ে নদী পাড়ি দেন। সাতক্ষীরা থেকে ১৪টি মহিষ নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রাকচালক রবিউল ইসলাম জানান, রবিবার রাত ২টার দিকে ঘাটে আটকা পড়ি। প্রায় ১০ ঘণ্টা পার হলেও ঘাটে মহিষগুলো নামাতে না পারায় কয়েকটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান,  দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে  মোট ১৯টি ফেরি ছিল। এর মধ্যে রো রো ফেরি ভাষাশহীদ বরকত, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এবং শাহ মখদুম ফেরি মেরামতের জন্য নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়। এর মধ্যে শাহ মখদুম মেরামত শেষে ১০-১১ দিন ধরে মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে চলছে। এই নৌপথে রো রো ফেরি বেশি থাকলে দ্রুত আটকে থাকা গাড়ি পারাপার করা সম্ভব হতো।

সর্বশেষ খবর