ফোরাম অব ইয়ং পার্লামেন্টারিয়ানের প্রেসিডেন্ট উগান্ডার তরুণ এমপি মাউরিন অসরো বলেছেন, বিশ্বে ১২০ কোটি তরুণ ভোটার থাকলেও পার্লামেন্টে তরুণ এমপি রয়েছেন মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ। তিনি বলেন, বিশ্বে ৩০ বছরের কম বয়সী এমপির বেশির ভাগই রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তরুণরা রাজনীতিতে আসতে চাইলেও তাদের নানা রকম সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। মনোনয়নস্বচ্ছতার অভাবেও তারা ছিটকে পড়েন।
গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আইপিইউ সম্মেলনের চতুর্থ দিনে প্রেস ব্রিফিংয়ে তরুণ এমপিদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ফোরাম অব ইয়ং পার্লামেন্টারিয়ানের প্রেসিডেন্ট উগান্ডার তরুণ এমপি মাউরিন অসরো (২৬) এ বিষয়ে মূল বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন আইপিইউর জেন্ডার পার্টনারশিপ প্রোগ্রামের প্রধান জেনেভার এমপি জিইনা হিলাল (২৯) ও আইপিইউর মিডিয়া স্পোকসপারসন জেইন মিলিগান।
মাউরিন অসরো বলেন, রাষ্ট্র যদি তরুণদের রাজনীতিতে আসার জন্য বা পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য উৎসাহিত করে তাহলেই সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্য দূর হবে। কিন্তু আইপিইউর এই সম্মেলনে ৩০ বছরের কম বয়সী পার্লামেন্টারিয়ান রয়েছেন মাত্র ১২ জন। অর্থাৎ পার্লামেন্টে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব খুবই নগণ্য। তিনি জানান, আইপিইউ সম্মেলন থেকে সব সদস্য দেশগুলোর প্রতি পার্লামেন্টে আরও বেশি তরুণ প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব গতির বিশ্ব। তরুণরা অনেক বেশি গতিশীল। তারা অনেক বেশি কর্মশক্তিসম্পন্ন। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তরুণদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো ও উৎসাহিত করা। তিনি বলেন, যুবাদের অনেকে বিশ্বাস করতে পারেন না। প্রশ্ন তোলেন, তারা পার্লামেন্টে গিয়ে উন্নয়নমূলক কাজকর্মে কতটা অংশ নিতে পারবেন। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় তরুণদের। তাই তরুণরা রাজনীতিতে আসতে অনীহা প্রকাশ করেন।নিজের দেশের বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি তুলে ধরে মাউরিন অসরো জানান, ১৮ বছর বয়সে সবাই প্রাপ্তবয়স্ক হয়। ভোটাধিকার পায়। এই সময় কোনো অন্যায় করলে তাকে বিচারের আওতায় এনে প্রয়োজনে জেলেও পাঠানো হয়।
কিন্তু একই বয়সে কাউকে সংসদে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না, যা খুবই দুঃখজনক। সংবাদ সম্মেলনে ১২৮টি দেশের তরুণ এমপিদের নিয়ে পরিচালিত ‘ইয়ুথ পার্টিসিপেশন ইন ন্যাশনাল পার্লামেন্ট ২০১৬’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বিশ্বে তরুণ এমপিদের প্রতিনিধিত্ব সবচেয়ে বেশি সুইডেন। তাদের ১২ দশমিক ৩ শতাংশ এমপির বয়স ৩০ বছরের নিচে। আবার ৪০ বছরের কম বয়সী এমপিদের মধ্যে প্রথম ডেনমার্ক। সংসদে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব তাদের। এর পরেই আছে এনডোরা ও ইকুয়েডর। আবার ৪৫ বছরের কম বয়সী এমপিদের সংখ্যায় ওমান প্রথম। সংসদের ৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ এমপির প্রতিনিধিত্ব করেন তারা। এর পরেই রয়েছে ইথিওপিয়া (৬৩ দশমিক ৬) এবং এনডোরা (৬০ দশমিক ৭ শতাংশ)। ২০ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের এই সমীক্ষায় তরুণ এমপি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বে ২০ থেকে ৪৪ বয়সসীমার ভোটার রয়েছে ৫৭ শতাংশ, যার সংখ্যা ১২০ কোটি।