শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে সম্পর্ক : মওদুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছে, তার আরেকটা প্রমাণ হলো কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে সভা করা। এর আগে উনি (প্রধানমন্ত্রী) মাওলানাদের সঙ্গে একটা মিটিং করলেন। পরশু দিন করলেন কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে সভা। উদ্দেশ্যটা হলো আল্লামা শফী। এখন এদের সঙ্গে গিয়ে আওয়ামী লীগ ভিড়ছে। কওমি মাদ্রাসার মিটিংয়ে উনি বললেন যে, দাওরার ডিগ্রি যেটা কওমি মাদ্রাসার দেওয়া হয়, সেটা এমএ ক্লাসের সমমানের হবে। অথচ এ বিষয়টা আমাদের সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া। আমরা ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে গেজেটও প্রকাশ করেছি। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মানবাধিকার পরিষদের উদ্যোগে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য : সরকারের ভূমিকা ও জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,  কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির শাহিদুর রহমান তামান্না, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

নাইকো মামলা স্থগিত : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এই বিএনপি নেতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ আদেশ দেন। এর আগে ১২ এপ্রিল হাই কোর্ট মওদুদের নাইকো মামলা স্থগিতের বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে। এর ফলে বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে আইনি বাধা দূর হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে মওদুদ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। শুনানি শেষে চেম্বার আদালত ৭ মে পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়। আদালতে নিজের পক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা শুনানি করেন।

২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর মওদুদের আবেদেনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ নিম্ন আদালতে চলমান এই মামলার বিচার আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে। এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে মওদুদের আবেদন খারিজের যে আদেশ বিচারিক আদালত দিয়েছে, তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না— জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট। হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে যায়। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ হাই কোর্টের আদেশ বহাল রাখে। একই সঙ্গে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চ রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। কিন্তু ৪ জানুয়ারি এ মামলার রুল শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চ বিব্রতবোধ করে। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চে আসে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ মামলার প্রধান আসামি। খালেদা জিয়াসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। মামলার অন্যতম আসামি মওদুদ আহমদ এ মামলায় আরও কিছু নথি তলব চেয়ে এবং ওয়াশিংটনে নাইকোর বিষয়ে চলা আরবিট্রেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট বিচারিক আদালত এ আবেদন খারিজ করে। এর বিরুদ্ধে মওদুদ হাই কোর্টে আবেদন করেন।

জানা গেছে, সেনাসমর্থিত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দুদক নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে। পরবর্তী বছরের ৫ মে খালেদা জিয়া, মওদুদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এতে অভিযোগ করা হয় : ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাস ক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

সর্বশেষ খবর