শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

জুন ক্লোজিংয়ের নামে ভয়াবহ লুটপাট

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

জুন ক্লোজিংয়ের নামে লালমনিরহাটে চলছে ভয়াবহ লুটপাট। কাগজে-কলমে প্রকল্প দেখিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ১০ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই কাগজে-কলমে বাস্তবায়ন দেখিয়ে সরকারের এসব টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা সরেজমিন এসব কাজ তদারকি না করেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সরকারি অর্থ ছাড় করছেন বলেও এলাকাবাসী জানিয়েছেন। ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার আদেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এ সময়ের মধ্যে কাজ না হসেই সব কাজের অগ্রগতি সরেজমিন দেখতে সদরের ৩১টি প্রকল্পের ছয়টিতে গেলে কোনো প্রকল্পেরই অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল মতিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কাজ হয়নি, আপনি লেখেন, যা হওয়ার আমার হবে। একইভাবে কালীগঞ্জের ১৯টি প্রকল্পের কাজ ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলেও সরেজমিন চারটি প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে কাজ এখনো শুরুই হয়নি। কবে শুরু হবে তার কোনো সদুত্তর মেলেনি। এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সাংবাদিকদের জানান, সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় চলছে কার্যত দুই পিআইও’র শাসন। গত চার বছরে এই দুই কর্মকর্তা নামে-বেনামে টাকার পাহাড় গড়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে এই দুই কর্মকর্তা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। টিআর ও কাবিখার ক্ষেত্রে যেসব প্রকল্পে সোলার প্রকল্প রয়েছে এসব প্রকল্পে কিছুটা স্বচ্ছতা মিললেও বাকি সব প্রকল্পে ঘটছে পুকুর চুরির মতো ঘটনা। টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে সাধারণ মানুষের চেয়ে মোটাতাজা হয়েছে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় এমপিরা আগামীতে ভোটের আশায় তাদের বরাদ্দের অধিকাংশই দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ কর্মীদের। সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

 অন্তত অর্ধশত প্রকল্পে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সিকিভাগ কাজ না করেই প্রকল্পের সমুদয় টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও প্রকল্প চেয়ারম্যানরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন।

৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কীভাবে সম্ভব এমন প্রশ্নের উত্তরে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ আলাউদ্দিন খান বলেন, যদি সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রস্তুতি থাকে, তাহলে কাজ শেষ করা তেমন ব্যাপার নয়। তাছাড়া কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটা না করলে বরাদ্দ ফেরত যাবে। আর কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকলে বলুন, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর