শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভারতে রোহিঙ্গারা থাকতে পারবে না আদালতকে জানিয়ে দিল সরকার

কলকাতা প্রতিনিধি

দেশের নিরাপত্তার কারণেই রোহিঙ্গাদের ভারতে বসবাসের অনুমতি দেওয়া যাবে না বলে দেশটির সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘রোহিঙ্গারা এ দেশে শরণার্থী হিসেবে থাকতে পারবে না। রোহিঙ্গা মুসলিমরা দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় হুমকি।’ সরকারের তরফে এও জানানো হয় যে, ‘জাতিগত কারণে নয়, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত।’ গতকাল শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।

৫ সেপ্টেম্বরই ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজেজু ফের একবার স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর, হায়দরাবাদ, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থানসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী অবৈধভাবে বসবাস করছে। রোহিঙ্গারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী তাই ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের চিহ্নিত করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। আর ভারতকে এ ব্যাপারে কারও উপদেশেরও দরকার নেই, কারণ ভারতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় উদ্বাস্তু রয়েছে।’

সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেন দুই রোহিঙ্গা মুসলিম। মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া দুই রোহিঙ্গা মুসলিম মুহম্মদ সালিমুল্লাহ ও মুহম্মদ সাকির আদালতে আরজি জানান তাদের যেন ফেরত পাঠানো না হয়। তাদের আশঙ্কা, ভারত থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলে তাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলে। এর পরই কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় কেন্দ্র। ১৮ সেপ্টেম্বর ওই মামলার শুনানি।

দুই দিন আগেই দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও রোহিঙ্গা ইস্যুকে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে বড়সড় হুমকি বলে মন্তব্য করেন। এ বিষয়টাকে অত্যন্ত শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে বলেও জানান তিনি। রাজনাথ সিং ছাড়াও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিং, আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার— প্রত্যেকেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের কড়া অবস্থানের কথা বলেন।

যদিও রোহিঙ্গা মুসলিমদের ফেরত পাঠানো নিয়ে কেন্দ্রের ওই অবস্থানের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এমনকি কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও সরকারের সমালোচনা করে। জাতিসংঘের তরফেও ভারত সরকারের এ পরিকল্পনার সমালোচনা করা হয়।

 

সর্বশেষ খবর