মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

গ্যালারি চিত্রকে সুদীপ রায়ের প্রদর্শনী

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

ধানমন্ডির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হয়েছে ভারতীয় শিল্পী সুদীপ রায়ের একক চিত্র প্রদর্শনী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গতকাল এ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী। চিত্র সমালোচক মইনুদ্দীন খালেদের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পী কনক চাঁপা চাকমা ও শিল্পী মুনীরুজ্জামান।

ঢাকার রিকশা, মসজিদ ও পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ভবনের ছবির পাশাপাশি প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে বিশ্রামরত নারীর ন্যুড শরীর, কলকাতার চায়ের দোকান, মাটির ভাঁড়, বেনারসের নদীর ধারে সাধু, পণ্ডিতের মুখ, বেনারসের প্রাচীন ভবনের ক্ষয়ে যাওয়া প্রাচীর, খিলান, টাঙ্গা ইত্যাদির ছবি।  প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ২ অক্টোবর শেষ হবে এই প্রদর্শনী।

 

দ্বিজেন শর্মা স্মরণে বাংলা একাডেমি

কথামালা, সংগীত ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতিবিদ দ্বিজেন শর্মাকে স্মরণ করেছে বাংলা একাডেমি।

গতকাল বিকালে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই দ্বিজেন শর্মার জীবনী পাঠ করেন প্রকৃতি লেখক মোকারম হোসেন।

আলোচনা ও স্মৃতিচারণায় অংশ নেন দ্বিজেন শর্মার স্ত্রী ড. দেবী শর্মা, ভাষাসংগ্রামী প্রতিভা মুত্সুদ্দী, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, পক্ষিবিশারদ ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার, স্থপতি তুঘলক আজাদ, নটর ডেম নেচার স্টাডিজ ক্লাবের পক্ষে নাজমুল হাসান প্রমুখ।

এতে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে দ্বিজেন শর্মার জীবন ও কর্ম নিয়ে নির্মিত প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের তথ্যচিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের শিল্পীরা।

বক্তারা বলেন, দ্বিজেন শর্মার পরিচয় বহুধাবিস্তৃত। বাংলায় নিসর্গসাহিত্য তার হাতে নতুন মাত্রা লাভ করেছে। তার শ্যামলী নিসর্গ, গাছের কথা ফুলের কথা, গহন কোন বনের ধারে, কুরচি তোমার লাগি, প্রকৃতিমঙ্গল ইত্যাদি বইপত্র এক নতুন গদ্য ও ভাবনারীতির পরিচয়বহ। তারা আরও বলেন, নটর ডেম কলেজকে বৃক্ষশোভামণ্ডিত করতে যেমন দ্বিজেন শর্মার প্রধান ভূমিকা ছিল তেমনি বাংলা একাডেমি, টাঙ্গাইলের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণ তার চিন্তাকুশলতায় ও পরিকল্পনায় সবুজাভ হয়ে উঠেছিল। বক্তারা বলেন, দ্বিজেন শর্মা তার চিন্তা ও কর্মের প্রবাহ ছড়িয়ে দিয়েছেন উত্তর প্রজন্মের মাঝে। তার হাতে গড়া সংগঠন তরুপল্লব দেশের অসংখ্য তরুণ তরুণীকে নিসর্গ রক্ষা ও লালনে উদ্বুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখছে। মিরপুরের জাতীয় বোটানিক্যাল গার্ডেনকে দ্বিজেন শর্মার স্মরণে নামাঙ্কিত করে আমরা তার প্রতি যোগ্য সম্মান প্রদর্শন করতে পারি।

দ্বিজেন শর্মার স্ত্রী ড. দেবী শর্মা বলেন, আমি আমার সুদীর্ঘদিনের জীবনসংগীকেই শুধু হারাইনি, একজন ভালো মানুষকেও হারিয়েছি; যিনি নিসর্গের মধ্য দিয়ে জীবনের নতুন অর্থ সন্ধান করেছেন, সাধারণ মানুষকেও উদ্বুদ্ধ করেছেন সে পথে। তিনি বলেন, প্রকৃতির সন্তান দ্বিজেন শর্মা তার প্রকৃতির কোলেই ফিরে গেছেন, এর মধ্য দিয়ে যেন তার জীবনবৃত্ত পূর্ণতা লাভ করেছে।

সভাপতির ভাষণে ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান বলেন, শুধু প্রকৃতিপ্রেমিক বললে দ্বিজেন শর্মার পুরো পরিচয় দেওয়া হয় না। তিনি প্রকৃতি ও মানুুষের জীবনের মধ্যে সুষম সংযোগ ঘটানোর চেষ্টা করেছেন এবং মানুষের জন্য একটি সুষম সমাজের স্বপ্ন দেখেছেন। এই স্বপ্নই তাকে উদ্বুদ্ধ করেছে ন্যায়পরায়ণ, সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শে। তিনি চলে গেলেন কিন্তু রেখে গেছেন তার অনন্য সাধারণ রচনা ও অসাধারণ মানবিক কর্মের আদর্শ।

 

সর্বশেষ খবর