শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

‘চাল ও গম ব্যবসায়ীদের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে লাইসেন্স নিতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, চাল ও গমের খুচরা, পাইকারি ব্যবসায়ী, আড়তদার, আমদানিকারক ও মিলারদের আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে খাদ্য অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। অন্যথায় ১৯৫৬ সালের কন্ট্রোল অব অ্যাসেনশিয়াল কমোডিটির অ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই আইন অনুযায়ী এই ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স খাদ্য অধিদফতর থেকে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের (ডিসি ফুড) সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইসেন্স না নিলে কন্ট্রোল অব অ্যাসেনশিয়াল কমোডিটির অ্যাক্ট অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের তিন বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানার মুখে পড়তে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৫৬ সালের কন্ট্রোল অব অ্যাসেনশিয়াল কমোডিটির অ্যাক্ট অনুযায়ী এক মেট্রিক টনের বেশি চাল ও গম ব্যবসায়ীদের খাদ্য অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমাদের আরসি ফুড ও ডিসি ফুডরা অজ্ঞতার কারণেই হোক বা অন্য কোনো কারণে হোক এতদিন এ বিষয়ে সচেতন ছিলেন না। এ কারণে আইনটি তারা কার্যকর করেননি।

কামরুল ইসলাম বলেন, এই আইন অনুযায়ী মিলার, আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী, আড়তদার, খুচরা ব্যবসায়ী— প্রত্যেককেই খাদ্য অধিদফতর হতে লাইসেন্স নিতে হবে। তিনি বলেন, বড় বড় ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা অন্যান্য মন্ত্রণালয় হতে লাইসেন্স নিয়ে থাকে। খাদ্য অধিদফতরকে বেশিরভাগ সময় তারা ইগনোর (অবহেলা) করে। মনে করেন খাদ্য অধিদফতরের লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। কিন্তু কন্ট্রোল অব অ্যাসেনশিয়াল কমোডিটির অ্যাক্ট অনুযায়ী অন্যান্য দফতরের লাইসেন্স থাকলেও চাল ও গমের ব্যবসার ক্ষেত্রে খাদ্য অধিদফতর হতে লাইসেন্স নিতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, মিলার, আড়তদার, পাইকারি, খুচরা ও অমদানিকারক প্রত্যেককে মজুদ করা চাল ও গমের পাক্ষিক হিসাব জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে দিতে হবে, এটা আইনে বলা আছে। কিন্তু তারা সেটা করেন না। মজুদের পাক্ষিক হিসাব না দিলে এই আইনে তিন বছরের জেলসহ জরিমানার বিধান আছে।

তিনি বলেন, চাল ও গম ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স নিতে হবে এবং পরিষ্কার পাক্ষিক হিসাব দিতে হবে। যারা চিনি, গম ও আটার ব্যবসা করেন তারা কিন্তু চালের ব্যবসাও করেন। অনেকের লাইসেন্স আছে, অনেকের নেই। খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বড় বড় ব্যবসায়ী বিপুল পরিমাণ চাল মজুদ বিভিন্ন গোডাউনে ছিল, এখনো আছে। আমি তাদের নাম বলতে চাই না। এরাই বিভিন্ন সময়ে সিন্ডিকেট করে তেলের দাম, চিনির দাম বাড়ায়। খবর পেয়েছি দিনাজপুরের বিভিন্ন গোডাউনে তাদের এক লাখ, দুই লাখ, তিন লাখ বস্তা চাল মজুদ রয়েছে। আমাদের কাছ থেকে তারা লাইসেন্সও নিচ্ছে না।

তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী, পাইকারি পর্যায়ে একজন ব্যবসায়ী ৩০০ মেট্রিক টন ধান ও চাল ৩০ দিন পর্যন্ত মজুদ রাখতে পারবেন। ৩০ দিনের মধ্যে এই মজুদ বিক্রি না হলে রিপোর্ট করে জানাতে হবে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরসি ফুড ও ডিসি ফুডদের নির্দেশনা দিয়েছি আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত তারা লাইসেন্স নেওয়ার জন্য নোটিস করবেন ব্যবসায়ীদের। তিনি বলেন, আমরা প্যানিক সৃষ্টি করতে চাই না। অক্টোবরের ৩০ তারিখের মধ্যে তাদের অবশ্যই লাইসেন্স নিতে হবে। না হয় আমরা জেলা প্রশাসক, মোবাইল কোর্ট ও আমাদের অফিসারদের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, অকাল বন্যার সুযোগ নিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছিল। ইনশাল্লাহ আমরা সফলতার সঙ্গে সেই সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। সংকট সৃষ্টিকারীরা ব্যর্থ হয়েছে। এই গোষ্ঠী যাতে আর কোনো দিন সংকট অবস্থা সৃষ্টি করতে না পারে, অপতত্পরতা না চালাতে পারে এ জন্য আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ নিয়েছি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তদন্ত করছে। তাদের শনাক্ত করে তারা ব্যবস্থা নেবে।

এ সময় খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে সারা দেশে খোলাবাজারে চাল বিক্রির জন্য প্রতিদিন ২ হাজার ১০৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে এর মধ্যে প্রতিদিন কমবেশি ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল বিক্রি হচ্ছে। বিক্রির হার ৭৫ শতাংশ। একইভাবে ঢাকায়ও ওএমএস এ চাল বিক্রির হার বেড়েছে। প্রতিদিন ১২০ মেট্রিক টন বরাদ্দ হচ্ছে। এর মধ্যে ৯০ মেট্রিক টন বিক্রি হচ্ছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর