রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গারা এবার ক্ষুধার জ্বালায় পালিয়ে আসছে

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বিতাড়নে মিয়ানমার সেনারা এবার নতুন পন্থায় এগোচ্ছে। তারা রোহিঙ্গাদের গ্রাম অবরুদ্ধ করে রাখছে। ঘর থেকে বাসিন্দাদের বের হতে দিচ্ছে না। ফলে খাবার না পেয়ে ক্ষুধার জ্বালায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে। জানা গেছে, এরই মধ্যে ক্ষুধার যন্ত্রণায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, রাখাইনে সেনারা তাদের গ্রাম অবরুদ্ধ করে রাখায় কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। কেউ খাবারের সন্ধানে বের হলে তাদের খাবার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আবার জোর করে খাবারের সন্ধানে গেলে তাদের নিখোঁজ করে দেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা জানান, অবরুদ্ধ করে রাখায় তাদের মজুদ খাবার শেষ হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে তারা জানতে পারেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ ও খাবার দেওয়া হচ্ছে। তাই খাবারের আশায় টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তারা এখন পালিয়ে আসছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গতকাল সকালে ও আগের দিন শুক্রবার রাতে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এ ছাড়া টেকনাফের কেরুনতলী, বরইতলী, নাইট্যংপাড়া ও হ্নীলা ইউনিয়নের জাদীমুড়ো, জালিয়াপাড়া, ওয়াব্রাং, হোয়াইক্যং উলুবনিয়া, উনচিপ্রাং, লম্বাবিল সীমান্ত দিয়েও আসছে রোহিঙ্গা।

পালিয়ে আসাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, রোহিঙ্গা গ্রামগুলো কয়েক সপ্তাহ ধরে সেনারা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গ্রাম থেকে কেউ কোথাও বের হতে পারছে না। কাজকর্মে যেতে পারছে না। ফলে তাদের গ্রামে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। রাখাইনের মংডু সুধাপাড়ার গোল বাহার জানান, এক সপ্তাহ আগে রাতের অন্ধকারে গ্রামের কয়েক শ লোক একসঙ্গে পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন। রাখাইনের বুসিডং চালিপাড়ার ফজল আহমদ (৭০) জানান, তিনি পরিবারের আট সদস্য নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে তাদের গ্রাম। বাড়িতে কোনো খাবার মজুদ ছিল না। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছিল। শেষে ক্ষুধার জ্বালায় পালিয়ে বাংলাদেশের পথ ধরেন। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, রাখাইনের মংডু শহরের আশপাশের রোহিঙ্গা গ্রামে সেনারা নতুন করে আগুন দিচ্ছে। শুক্রবার রাতে মংডু সুধাপাড়ায় আগুনে কয়েক শ রোহিঙ্গার বাড়িঘর পুড়ে যায়। গত আগস্টে দমন অভিযান শুরু হলেও এত দিন এসব গ্রামে আগুন দেওয়া বাদ রেখেছিল সেনাবাহিনী। এখন নতুন করে আগুন দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর