শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ব্রেক্সিট ইস্যু

পার্লামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ ভোটে হেরেছে মে

ব্রেক্সিট ইস্যুতে বড় ধরনের হোঁচট খেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের ১১ এমপির বিদ্রোহের মুখে বুধবার ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটে ব্রিটিশ সরকারের পরাজয় হয়েছে। এই ভোটের মাধ্যমে ব্রাসেলসের সঙ্গে চূড়ান্ত ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর ভোট গ্রহণের জন্য পার্লামেন্টকে একটি আইনি বৈধতা দিলেন ব্রিটিশ এমপিরা। অর্থাৎ ইইউ থেকে বিচ্ছেদ হয়ে যেতে হলে পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। এমনই রাজনৈতিক ক্ষত নিয়ে ব্রেক্সিট আলোচনায় বসতে গতকাল ব্রাসেলস  যেতে হলো তেরেসা মে কে। গত ১০ দিনের মধ্যে এটা তার তৃতীয়বার ব্রাসেলস যাত্রা। সেখানে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য কেমন হবে তা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি ২৭ দেশের সঙ্গে দর কষাকষিতে বসার কথা তার। কিন্তু তার আগেই তিনি বুধবার পার্লামেন্টে হাউস অব কমন্সে যেভাবে হেরে যান তাতে বেশ বিব্রত তার সরকার। স্কাই নিউজ জানিয়েছে, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার যে ব্লুপ্রিন্ট নিয়ে এগোচ্ছে সরকার তাতে সংশোধনী আনতে হবে। এমন দাবিতে একটি সংশোধনী আনেন তেরেসা মের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের এমপি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ডোমিনিক গ্রিভ। এতে তিনি ব্রেক্সিট বিল চূড়ান্ত করার আগে পার্লামেন্টে তা অর্থপূর্ণ ভোটে দেওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, পার্লামেন্টে তা ভোটে পাস করে লিখিত আইনে পরিণত করতে হবে। এ নিয়ে হাউস অব কমন্সে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় তেরেসা মের টিম পার্লামেন্টে তাদের নিজেদের এমপিদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তারা তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেন, এমনটা করা হলে তাতে সরকার বিপদে পড়বে। দুর্বল হয়ে পড়বে ব্রেক্সিট সমঝোতায় দরকষাকষি। কিন্তু কিছুতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় ওই প্রস্তাবটি ৬৫০ আসনের পার্লামেন্টে ভোটে দেওয়া হয়। প্রস্তাবের পক্ষে পড়ে ৩০৯ ভোট ও বিপক্ষে পড়ে ৩০৫ ভোট। এর মধ্য দিয়ে পরাজয়ের শিকার হন তেরেসা মে।

শুরুতে ডোমিনিক গ্রিভ বলেন, এ বিলের পক্ষে প্রত্যেক সংসদ সদস্যের অবস্থান নিয়ে দাঁড়ানো উচিত এবং তা গণনা করা উচিত। এ সময় তিনি তার নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির অনেক সদস্যের কড়া সমালোচনা করেন। তারা তাকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতির কারণে ওই প্রস্তাব ভোটে দেওয়া হলে সরকার হতাশাজনক অবস্থায় পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের এক মুখপাত্র। তবে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বলেছেন, ‘ছোট এই বিপর্যয়’ ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দলের যেসব এমপি সরকারের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন তাদের মধ্যে আটজন ছিলেন সাবেক মন্ত্রী। ভোটের পর তাদের মধ্যে স্টিফেন হ্যামন্ডকে রক্ষণশীল দলের ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে যুক্তরাজ্যের বিরোধী লেবার দলীয় নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ইইউ সম্মেলনের আগে এই পরাজয় প্রধানমন্ত্রী মের ‘কর্তৃত্বকে লজ্জাজনকভাবে খর্ব’ করেছে।

২০১৯ সালের মার্চ মাসের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক কেমন হবে তাই নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।

সর্বশেষ খবর