মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দক্ষিণাঞ্চলে দ্বিতীয় প্রকল্প নির্মাণে জরিপ প্রকল্প পাস

পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র

জিন্নাতুন নূর

দক্ষিণাঞ্চলে দ্বিতীয় প্রকল্প নির্মাণে জরিপ প্রকল্প পাস

সরকার দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চায়। এ জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় ৮টি স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। আর নির্মাণ স্থান নির্বাচনের জন্য যে জরিপ প্রকল্প তা সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে পাস হয়েছে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এ জরিপ কাজ পরিচালনা করবে। জরিপটি পরিচালিত হবে সরকারি অর্থায়নে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ প্রকল্পের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচনে দক্ষিণাঞ্চলে শিগগিরই জরিপ কাজ শুরু হবে। জরিপকৃত স্থানগুলোর মধ্যে আছে পটুয়াখালীর খোত্তার চর, নিদ্রার চর, টেংরার চর ও পাখিরার চর আর বরগুনার আলিশার মোড়, খুলনার চর হালিয়া, নোয়াখালীর বইরার চর এবং ফেনীর মুহুরির চর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের দ্বিতীয় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে। 

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সার্ভে অব দ্য সিলেকটিং পটেনশিয়াল প্লেস ফর এ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট ইন সাউদার্ন রিজন অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপটির প্রাপ্ত ফলাফল থেকে শেষ পর্যন্ত ৮টি থেকে এক বা একাধিক স্থান নির্মাণ প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হবে। সম্প্রতি সে প্রকল্পটি পাস হয়েছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ে পরিচালিত জরিপের ফলাফল থেকেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের মূল স্থান নির্বাচন করা হবে। আর জরিপ পর্যালোচনা শেষে এক বা একাধিক স্থান নির্বাচন করা হতে পারে।   বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রাপ্ত তথ্যে, দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তুতি হিসেবে উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের জন্য জরিপ পরিচালনা করা হবে। দক্ষিণাঞ্চলে তৈরি হতে যাওয়া কেন্দ্রটির জরিপের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শিগগিরই এ বিষয়ে জরিপ পরিচালিত হবে।  সাধারণত একটি নতুন স্থানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির আগে অনেকগুলো বিষয় যাচাই করে নিতে হয়। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে যাচাই না করলে এটি স্পষ্ট হবে না যে, নির্বাচিত স্থানটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য উপযোগী কিনা। এ জন্য বেশ কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এই জরিপ পরিচালিত করবে বিশেষজ্ঞ দল। যার মধ্যে আছে ভূ-প্রকৃতি, ভূতাত্ত্বিক গঠন, বিদ্যুৎ অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি। এ ছাড়া প্রকল্পটির পাশে পানির পর্যাপ্ত জোগান আছে কিনা তাও যাচাই করতে হবে। জরিপ কাজে সহায়ক তথ্য হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের ভূ-তাত্ত্বিক পরিসংখ্যান, আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো জরিপে ব্যবহার করা হবে। এর বাইরে ভারতের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যও জরিপে ব্যবহার করা হবে।  ২০৪১ সালের মধ্যে বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ৪টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে ইচ্ছুক। এ সময়ে কয়লা ও গ্যাসে দেশের মোট বিদ্যুতের ৭০ শতাংশ, বাকি ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ পারমাণবিক ও অন্যান্য উত্স থেকে উত্পাদনের কথা। দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অর্থাৎ রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের কাজ আগামী ৩০ নভেম্বর শুরু হচ্ছে। ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে এর উত্পাদনে আসার কথা। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের প্রতিটি থেকে ১১০০ থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদন করার কথা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর