সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজধানীতে তিন দিনব্যাপী জাতীয় সবজি মেলা শুরু

শেকৃবি প্রতিনিধি

‘সারা বছর সবজি চাষে, পুষ্টি-স্বাস্থ্য-অর্থ আসে’ স্লোগানকে সামনে রেখে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চত্বরে গতকাল শুরু হয়েছে জাতীয় সবজি মেলা-২০১৮। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এ সবজি মেলায় দেশের সরকারি, বেসরকারি ও এনজিও মিলে প্রায় অর্ধ শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। গতকাল মেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলায় প্রায় শতাধিক সরকারি, বেসরকারি ও এনজিও ৮০টি স্টল ও ৪টি প্যাভিলিয়নে অংশ নিয়েছে।

 যাতে ১০৪ ধরনের সবজির প্রদর্শন ও কিছু কিছু সবজি স্বল্প আঙ্গিকে বিক্রয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলার প্রবেশ মুখেই প্লাই উড দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি পিরামিড। পিরামিডের গায়ে বসানো হয়েছে মৌসুমি বিভিন্ন সবজি। মেলার প্রবেশ মুখেই ডান পাশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের স্টল। বিভিন্ন শাক-সবজি দিয়ে সজ্জিত এ স্টলের বাইরে টবে করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সবজি গাছ। বন্যা কবলিত এলাকায় সবজি চাষের কৌশল প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। খাদ্যের পুষ্টিমান সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) নিয়েছে নানা উদ্যোগ। একজন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ স্টলে আসা দর্শনার্থীদের ওজন ও উচ্চতা পরিমাপ করে পুষ্টি ও দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছেন। এ সম্পর্কে বারটানের প্রকল্প পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জ্যোতিলাল বড়ুয়া বলেন, প্রতিদিন আমাদের ৪০০ গ্রাম ফলমূল ও শাক-সবজি খাওয়া প্রয়োজন। আমরা খাচ্ছি গড়ে ২৫২ গ্রাম। ফলে পুষ্টির অভাবে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে রাতকানা, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) তাদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন শাক-সবজি ও ফলমূল প্রদর্শন করছে। হাইড্রোফোনিক (মাটি ছাড়া কেবল পানিতে) পদ্ধতিতে ফসল ফলানো ও দেশে প্রথম বারের মতো শৈবাল চাষের পদ্ধতি স্টলে প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলায় বিভিন্ন স্টলে সবজি প্রদর্শনের পাশাপাশি বিক্রিও করছে। রয়েছে মাশরুমের প্রদর্শনী ও মাশরুম দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাদ্যের ব্যবস্থা। এ ছাড়া প্রদর্শনের পাশাপাশি কৃষির বিভিন্ন উপকরণ, বিভিন্ন সবজির চারা ক্রয়েরও সুযোগ রয়েছে।

মেলা উপলক্ষে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে কেআইবি চত্বর পর্যন্ত একটি র‌্যালি বের হয়। র‌্যালি শেষে সকাল ১০টায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে কেআইবি অডিটরিয়ামে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। সেমিনার শেষে নৌপরিবহনমন্ত্রী মেলার উদ্বোধন করেন। পরে মন্ত্রী, কৃষি সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কেআইবির নেতারা বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। গতকাল বিকালে মেলার প্রধান ফটকের উল্টোদিকে আয়োজন করা হয় বাউল গানের। দেশের প্রখ্যাত বাউল শিল্পীরা কৃষি ও খাদ্যের পুষ্টিমান নিয়ে বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন।

সর্বশেষ খবর