বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তিন ছাত্রীকে ইভটিজিং ও এক ছাত্রকে শারীরিক হামলার অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির তিন সদস্যকে আবারও হাই কোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ৩১ জানুয়ারি বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. কামরুল আহসান, যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও কমিটির সদস্য ড. মো. মাকসুদ হেলালী এবং পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজকে হাই কোর্টে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। গতকাল আদালতে হাজির হয়ে ওই তিন শিক্ষক পরবর্তী তারিখে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলেও আদালত তা গ্রহণ করেনি।
শুনানিতে আদালত ওই তিন শিক্ষককে বলেন, আমাদের সমাজে যেখানে ধর্ষণের শিকার হলেও নারীরা তা বলতে বা প্রকাশ করতে চান না। সেখানে তিন ছাত্রী ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করল অথচ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে উল্টো তাদেরকেই দোষারোপ করলেন। এটা ঠিক হয়নি। আদালত আরও বলেন, কোন বিবেচনায় আপনারা অভিযোগকারী তিন ছাত্রীকে দোষারোপ করলেন? তাদেরতো ভবিষ্যৎ আছে। সামাজিক অবস্থা আপনারা বিবেচনা করলেন না?
তিন ছাত্রীর করা পৃথক তিনটি রিট আবেদনের শুনানি চলছে এ আদালতে। তিন শিক্ষকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও ব্যারিস্টার আমিনুল হক। রিটের পক্ষে ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন ও বুয়েটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৌরভ কর্মকার। ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বুয়েটের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ ওঠে। পরে এ বিষয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরই মধ্যে অভিযোগকারী তিন ছাত্রী অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। এ অবস্থায় তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩ জুন প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই বছর তিন ছাত্রীকে শাস্তি দেয় বুয়েট কর্তৃপক্ষ। শাস্তি হিসেবে ওই তিন ছাত্রীকে আবাসিক হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও তিন টার্মের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করেন ওই তিন ছাত্রী। রিটে বলা হয়, চাপের মুখে তারা অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন। এ রিট আবেদনের পর হাই কোর্ট শাস্তি স্থগিত করে এবং রুল জারি করে। গত ১৮ জানুয়ারি আদালত মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখে যে, তদন্ত প্রতিবেদনে ইভটিজিংয়ের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে। পরে আদালত তদন্ত কমিটির তিন সদস্যকে তলব করেন।