বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বেতনের দাবিতে গার্মেন্ট কর্মীদের অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীর রামপুরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা। রামপুরার মেগা অ্যাপারেলস গার্মেন্টের শ্রমিকরা গতকাল বেলা ৩টার দিকে রামপুরা বাজার এলাকায় সড়কের দুই পাশ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে রাস্তার দুই ধারে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চরম ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ যাত্রীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত তিন মাস ধরে রামপুরার মেগা অ্যাপারেলস গার্মেন্টের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বকেয়া। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বার বার তাগাদা দেওয়া হলে শুধু আশ্বাসই দেয় কর্তৃপক্ষ।

এক মাসের বেতন আরেক মাসের শেষের দিকে নিয়ে যায়। গতকাল সকালে শ্রমিকরা ওই গার্মেন্টে কাজের জন্য গেলে দরজায় তালা ঝুলতে দেখেন। এরপর একে একে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক গার্মেন্টের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা গড়িয়ে দুপুর পর্যন্ত তারা মালিক পক্ষের কারও সাক্ষাৎ না পেয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।

 এ ঘটনায় সড়কের দুই পাশের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তর বাড্ডা থেকে রামপুরা টিভি সেন্টার এবং মৌচাক ও খিলগাঁও ফ্লাইওভার থেকে রামপুরা বাজার পর্যন্ত সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। উপায় না দেখে গণপরিবহনের যাত্রীরা পায়ে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়া শুরু করেন। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় নারী-শিশু ও বৃদ্ধদের। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু মালিক পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না বলেও দৃঢ়তা দেখান বিক্ষোভকারীরা।

আবু মুসা নামে এক শ্রমিক এ প্রতিবেদককে জানান, দেড় বছর ধরে তিনি ওই গার্মেন্টে কাজ করে আসছেন। গত তিন মাস তাদের বেতন বকেয়া রাখে মালিক পক্ষ। আগামী মাসে একসঙ্গে দেওয়ার কথা বলে তিন মাসের বেতন বকেয়া রাখা হয়। গতকাল সকালে কাজের জন্য গেলে গার্মেন্ট বন্ধ দেখেন তারা। পরে বাধ্য হয়ে তারা আন্দোলনে নামেন।

রবিন নামে এক পথচারী জানান, তিনি উত্তরা হাউস বিল্ডিং যাওয়ার জন্য গুলিস্তান থেকে আড়াইটার দিকে সুপ্রভাত পরিবহনে ওঠেন। পরে মৌচাক ফ্লাইওভারের সিগন্যাল পার হয়ে যানজটে পড়েন। বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত রামপুরা আবুল হোটেল এলাকা পর্যন্ত তাকে বাসে বসে থাকতে হয়। কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে হেঁটে রামপুরা ব্রিজে এসে অন্য আরেকটি বাসে ওঠেন তিনি।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) নাদিয়া জুঁই এ প্রতিবেদককে জানান, তিন মাস ধরে ওই গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছিল না। এখনো তারা এক মাসের বেতন পাবেন। এই বেতন না পেয়ে তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে থাকেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।

সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রামপুরার এক পাশের সড়ক খুলে দেওয়া হয় বলে জানায় রামপুরা থানা পুলিশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর