মঙ্গলবার, ৮ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
আলোচনাসভায় ড. কামাল

জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার পরিণতি ভয়াবহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার মতো গুরুতর অপরাধ আর করবেন না। তাহলে এর পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। তিনি বলেন, দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। এই ‘মহা লুটপাটের’ কারণে সরকারের অনেকেই তখন পালিয়ে যাওয়ার সুযোগটুকুও পাবেন না। গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। ‘সর্বগ্রাসী লুণ্ঠন বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’। ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা আপনাদের লুটপাটের ভাগ চাই না। শুধু শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে চাই, আপনারা যাতে সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন না হন। কাজেই সময় থাকতেই সাবধান হয়ে যান। জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সম্মানের সঙ্গে সরে পড়ুন। টাকা, অস্ত্র আর র‌্যাব-পুলিশ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণকে দাবিয়ে রাখতে পারবেন না। পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ আকার ধারণ করতে চলেছে। আপনাদের জনপ্রিয়তা এখন এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দশ ভাগ আসনও পাবেন না। তিনি বলেন, গাজীপুরে কী কারণে নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে তা এদেশের প্রতিটি জনগণ বুঝতে পেরেছে।

ড. কামাল হোসেন দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নাজুক অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, এরা কেউ এখন জনগণের পক্ষে কথা বলে না। এরা কেউ জনগণের প্রতিনিধি না। কারণ মানুষের ভোটে তারা নির্বাচিত হননি। এজন্যে দেশের জনগণকে দেশের মালিকানায় ফিরিয়ে আনতে হবে। আর সে জন্যেই সর্বস্তরের মানুষ নিয়েই এই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, এই ঐক্যের মাধ্যমেই দেশে বিরাজমান সর্বগ্রাসী মহালুটপাটের সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। এ সময় তিনি আগামী রোজার ঈদের পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র পক্ষ থেকে সমাবেশ করার ঘোষণা করেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সারা দেশে প্রতিটি মানুষই আজ পরিবর্তন চায়। তারা আর এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তেমনি অতীতের কোনো গতানুগতিক দুর্নীতিবাজ সরকারকেও তারা আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তিনি ড. কামাল হোসেনকে নেতৃত্বে থেকে সর্বস্তরের মানুষ নিয়ে অচিরেই রাস্তায় নামার পরামর্শ দেন। এতে সুফল পাওয়া যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেন, বিএনপির আমলে একটি হাওয়া ভবন ছিল। এতে কত দুর্নাম হয়েছে। কিন্তু এখন দেশে-বিদেশে হাজার হাজার ‘খাওয়া ভবন’ তৈরি হয়েছে। এদের লুটপাট ও দুর্নীতির হিসাবের তালিকায় হাজার কোটি টাকার নিচে কোনো অঙ্ক নেই। দেশের সর্বত্র ঘুষ আর লুটপাটের মহোৎসব চলছে। এদের চাঁদাবাজির হাত থেকে রাস্তার চা-ওয়ালা, বাদাম-ওয়ালাও রেহাই পাচ্ছে না।

এ ছাড়া গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় ঐক্যের মোস্তফা আমিন, কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ খবর