মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

যশোরে বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের দুই পাইলটের দাফন সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে রবিবার রাতে বিধ্বস্ত হওয়া বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানের দুই পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার মো. সিরাজুল ইসলাম ও স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত কবির পলাশের নামাজে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, দুর্ঘটনায় নিহত দুই পাইলটের নামাজে জানাজা গতকাল বিকালে ঢাকা সেনানিবাসের বিএএফ ঘাঁটি বাশারের বিগ টপ হ্যাঙ্গারে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান, সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিপুলসংখ্যক সামরিক-বেসামরিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া নিহত বৈমানিকদ্বয়ের নিকটাত্মীয়রাও জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে নিহত বৈমানিকদ্বয়কে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় ঢাকা সেনানিবাসে বিএএফ শাহীন কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে গতকালও দিনভর চলেছে উদ্ধার অভিযান। আগের দিন শেষ রাতে স্থগিত হওয়া উদ্ধার অভিযান গতকাল দিনভর চলে। দুপুরে যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পরিমল চন্দ্র কুণ্ডু সাংবাদিকদের বলেন, দুপুর পর্যন্ত আমরা বিধ্বস্ত বিমানের ৩৫ শতাংশের মতো উদ্ধার করতে পেরেছি। সন্ধ্যা ৭টায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। আজ সকালে আবার উদ্ধার কাজ শুরু হবে।

রবিবার রাত ৯টার দিকে বিমান বাহিনীর কে-৮ডব্লিউ মডেলের একটি প্রশিক্ষণ বিমান যশোর এয়ারপোর্ট থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে আরিচপুর গ্রামে বুকভরা বাঁওড়ের পানিতে আছড়ে পড়ে। বিমানে থাকা দুই পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার মো. সিরাজুল ইসলাম ও স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত কবির পলাশ নিহত হন। যশোর বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপক আলমগীর পাঠান বলেন, রবিবার রাত ৮টা ৫১ মিনিটে স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজ ও স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত প্রশিক্ষণ বিমানটি নিয়ে উড্ডয়ন করেন। ৯টা ৪ মিনিটে দুই পাইলটের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সর্বশেষ কথা হয়। এর দুই মিনিট পর ৯টা ৬ মিনিটে বিমানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থল আরিচপুর গ্রামের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রাত ৯টার দিকে তারা বিমানটিকে তাদের গ্রামের আকাশে অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখেন। কয়েক মুহূর্ত পরই তারা বজ পাতের মতো শব্দ শুনে বুকভরা বাঁওড়ের দিকে তাকিয়ে দেখেন বিমানটিতে আগুন জ্বলছে। সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটি বাঁওড়ের পানিতে আছড়ে পড়ে।

খবর পেয়ে যশোর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। বিমান বাহিনী ও সেনা বাহিনীর উদ্ধারকারী দলও ঘটনাস্থলে যায়। পৌঁছে যায় পুলিশ ও র‌্যাবের বেশ কয়েকটি টিম। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় নৌ বাহিনীর একটি টিম। গতকাল বিকালে একটি হেলিকপ্টারও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। 

বিধ্বস্ত হওয়া কে-৮ডব্লিউ মডেলের বিমানটি চীনের তৈরি। ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণে বিমানটি ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। দুর্ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর