শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

থানার ওসি যুবকটির কথা শুনে চমকে উঠেছিলেন

রোমান চৌধুরী সুমন, নারায়ণগঞ্জ

ফতুল্লা থানার ওসি মঞ্জুর কাদেরের সামনে এসে ২৭ বছর বয়সী যুবক মেহেদী হাসান বললেন, ‘আমি আমার বউকে মেরে ফেলেছি। আমার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেন স্যার।’ ওসি চমকে উঠলেন। অধস্তনদের বললেন, ‘এর মাথায় ছিট আছে নাকি একটু দেখুন তো!’ থানার লোকেরা খোঁজখবর নিয়ে জানালেন, না মাথায় ছিট নেই। আগের রাতে মেহেদী রাগের মাথায় তার স্ত্রী আফরিন আক্তার রীনার (২৩) গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে সত্যি সত্যিই মেরে ফেলেছেন। ওসি জানান, এই তথ্য পেয়ে মেহেদীকে হাজতে আটকে রাখা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সাবদিয়া গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে আফরিন আক্তার রীনা আর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার নিজামউদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান কাজ করতেন পঞ্চবটি এলাকার একটি হোসিয়ারি কারখানায়। কাজ করতে করতে তাদের মধ্যে প্রেম হয়ে যায়। কিন্তু সমস্যা হলো রীনা বিবাহিত, সন্তানও আছে। মেহেদীও বিবাহিত এবং সন্তানের পিতা। একজন স্বামীকে, অন্যজন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শুরু হয় তাদের নতুন সংসার। তারা পঞ্চবটিতে চাঁদনি হাউজিংয়ের ওমর ফারুকের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন। বৃহস্পতিবার রাতে দাম্পত্য কলহ বাধে টাকা নিয়ে। রীনা বাপের বাড়ি থেকে আড়াই লাখ টাকা এনে স্বামীকে দেন ঋণ হিসেবে। মেহেদী ওই টাকা সময়মতো শোধ করেননি। এজন্য খোঁটা দিয়ে স্বামীকে খুব গালাগাল করেন রীনা। রাগের মাথায় মেহেদী স্ত্রীকে মেরে ফেলেন। গতকাল সকালে মেহেদী তার মা জোছনা বেগমের কাছে অপরাধ স্বীকার করেন।

 মা ছেলেকে হুকুম দিলেন, ‘যদি আমার ছেলে হয়ে থাকিস এখনই থানায় গিয়ে স্যারেন্ডার কর।’ মায়ের নির্দেশে মেহেদী থানা চত্বরে গিয়ে এদিক-সেদিক চক্কর দিতে থাকেন। থানার লোকেরা ভাবেন, ব্যাপার কী! বেলা ১১টার দিকে মেহেদী থানায় ঢুকে খুব স্বাভাবিক গলায় ওসিকে বলেন, ‘অ্যাকশন নেন স্যার।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর