সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া প্রস্তুত

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত করা হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলে সুবিধামতো সময়ে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জাতির সামনে ঘোষণা করবেন আগামীর বাংলাদেশের ভিশন। ওইদিন জাতির সামনে তুলে ধরা হবে টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে কেমন বাংলাদেশ হবে? বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চায় স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী নির্বাচনী অফিসে নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির চতুর্থ বৈঠকে এ খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করার কথা নিশ্চিত করেন। নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. অনুপন সেন, ড. খালেকুজ্জামান, অর্থনীতিবিদ ড. খলীকুজ্জমান, ড. সেলিম মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিকুজ্জামান, শিক্ষাবিদ বজলুল খন্দকার, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামান, ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সায়েম খানসহ কমিটির প্রায় অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, গতকালের বৈঠকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ইশতেহারের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির কয়েকজন সদস্য অসুস্থতাসহ নানা কারণে উপস্থিত হতে পারেননি।

 সে কারণে আগামী ৪ নভেম্বর আমরা আবার বৈঠকে বসব। ওইদিন বৈঠক শেষে দলীয় সভানেত্রীর কাছে জমা দেওয়া হবে। আশা করছি আগামী ৭ তারিখের মধ্যেই ইশতেহার চূড়ান্ত হয়ে যাবে।

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির নেতারা জানান, এবার ইশতেহার তৈরি করা হচ্ছে, দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণাপত্রের আলোকে। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)কে। অতীতের মতো এবারও চমক দেওয়া হবে তরুণ সমাজের ব্যাপক কর্মসংস্থানের। আয় বৈষম্য কমিয়ে আনার ঘোষণা থাকবে এবারের ইশতেহারে। এ ছাড়াও ব্লু ইকোনমি, নগরায়ন এবং নগরায়নের সুবিধাসমূহ। গ্রামকে শহর করার টার্গেট থাকবে।

অঙ্গীকার ও কর্মসূচি তুলে ধরা হবে, আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণসহ কার্যকর সংসদ এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধতার বিষয়। এ ছাড়া সুশাসন ও প্রশাসনিক সংস্কার, আইন-শৃঙ্খলা ও দুর্নীতি, দারিদ্র্য বিমোচনসহ কর্মসংস্থান ও কৃষির আধুনিকায়ন, শিল্পায়ন ও বাণিজ্য, শিক্ষাসহ সংস্কৃতি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, চিকিৎসা ব্যয় সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে আনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ ইত্যাদি বিষয়ে দলীয় অবস্থান আরও স্পষ্ট করা হবে।

দলীয় সূত্র মতে, ২০০৮ সালের ‘দিন বদলের সনদ’ ও ২০১৪ সালের ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’-এর মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতিকে নতুন একটি চমক দিতে চায় আওয়ামী লীগ। দেড় কোটি তরুণ ও নারী ভোটারকে টার্গেট করে যুগোপযোগী ভোটারবান্ধব একটি শিরোনামের ইশতেহার জাতিকে উপহার দিতে চান আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এবারের ইশতেহারের শিরোনাম কী হবে— তা নির্ধারণ করবেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে তিনি সম্ভাব্য শিরোনামও বলে দিয়েছেন। কিন্তু দলীয় প্রধানের নিষেধ থাকায় নেতারা তা প্রকাশ করছেন না। সর্বশেষ চমকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সঙ্গে যুক্তরা।

সর্বশেষ খবর