রবিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দেশে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে : আনু মুহাম্মদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, সরকারদলীয় প্রার্থী ছাড়া অন্য দল বা জোটের প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছেন না। অনলাইনেও বিরোধী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নানাভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে দেশে একটা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনিশ্চয়তা, ভয়ভীতি ও সহিংসতার পরিস্থিতি নিয়ে ‘নাগরিক সমাজের পক্ষে আমরা’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, আইনজীবী সারা হোসেন, শাহ্দীন মালিক, ইতিহাসবিদ আহমেদ কামাল এতে বক্তব্য দেন। আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিগত আমলে দলীয় সরকারের অধীনে যতগুলো নির্বাচন বাংলাদেশে হয়েছে, সবগুলোই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

 বর্তমান সরকারের দাবি, তাদের অধীনেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। এটা এই সরকারের জন্য বড় পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে যেভাবে সরকারের ভূমিকা পালন করা উচিত তা সরকার করছে না, সরকার তার উল্টোটা করছে। দেশে ভয়ের পরিবেশ, নিরাপত্তাহীনতার শাসন কায়েম হয়েছে। আমরা এমনটা চাই না।’

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, দেশের সংবিধান আমাকে যে অধিকার দেয় তা আদায় করে  নেওয়ার ব্যাপার রয়েছে। তার সঙ্গে আরেকটি জিনিস সেটা হচ্ছে সাহস জোগানো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন বলেন, আসন্ন নির্বাচন কেমন হবে, আদৌ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে কিনা, সুষ্ঠু, অবাধ হবে কিনা জনমনে তা নিয়ে বিরাজ করছে প্রবল সংশয় এবং অবিশ্বাস। উৎসবের পরিবর্তে আতঙ্ক আর উদ্বেগ ঘিরে রেখেছে মানুষকে।

আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থীদের ওপর হামলা হচ্ছে, সহিংসতা হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ একটু দূরেই দাঁড়িয়ে দেখছে। অন্যদিকে সরকারি সমর্থক প্রার্থীরা প্রচারে গেলে শত শত পুলিশ থাকছে, সরকারি গাড়িসহ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

আইনজীবী শাহ্দীন মালিক বলেন, আইনের শাসনের এবং নীতি-নৈতিকতার প্রতি চরম অশ্রদ্ধাবোধ থেকেই বিরোধী প্রার্থীদের ওপর হামলার মতো কাজ হচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই যাতে প্রশাসন তার দায়িত্ব পালন করে।

ইতিহাসবিদ আহমেদ কামাল বলেন, সরকার উন্নয়নের কথা বলছে, তবে এই উন্নয়নের ফল কোথায় নেবে-তা জানি না। জবাবদিহিতা না থাকলে একদিন না একদিন তরুণ-তরুণীদের মুখোমুখি জবাবদিহি দিতে হবে।

নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, স্বাধীনভাবে দেশি এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের যথাযথ ভূমিকা পালন করার ব্যবস্থা, হামলা, মামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতা বন্ধ করা, নির্বাচনের সময় ধর্মীয়-সংখ্যালঘু নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর