সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট

নিজস্ব প্রতিবেদক ও সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে ভোটের সময় উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। গতকাল সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নারী-পুরুষ দল বেঁধে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন। প্রার্থীর কর্মীদের কাছ থেকে ভোটার নম্বর নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। দুপুর পর্যন্ত বেশির ভাগ কেন্দ্রে নারী-পুরুষের লম্বা লাইন দেখা গেছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা চোখে পড়েনি। তবে দুপুরের পর থেকে বেশির ভাগ কেন্দ্র ছিল ফাঁকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুপুরের মধ্যে বেশির ভাগ কেন্দ্রে ৬০-৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে বেশ কিছু কেন্দ্রে সব দলের পুলিং এজেন্ট দেখা যায়নি। রাস্তায় তেমন কোনো গাড়ি না দেখা গেলেও সবার মধ্যে ভোট উৎসব দেখা গেছে। বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল শান্ত। নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার মদনপুরের ২৪ নম্বর দেওয়ানবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা কম দেখা গেছে। সেখানে কর্মরত প্রিসাইডিং অফিসার আবু সাইদ তারেক জানান, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৭১৭ জন। বেলা দেড়টা পর্যন্ত ৫৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। একই এলাকার জামিয়া আরাবিয়া হাজী আফিজ উদ্দিন দারুল উলুম চাঁনপুর মাদ্রাসা ও এতিমখানা ভোট কেন্দ্রেও ভোটার সংখ্যা কম ছিল। সেখানে কর্মরত প্রিসাইডিং অফিসার আশিকুর রহমান জানান, এই কেন্দ্রে ২ হাজার ১০০ ভোটার রয়েছে। বেলা পৌনে ২টা পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। ওই এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার খলিলুর রহমান জানান, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ থানার কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে ভোটারদের বেশ উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে কর্মরত প্রিসাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান জানান, এই কেন্দ্রে ২ হাজার ৬৭৫ ভোটার রয়েছে। বেলা ২টা পর্যন্ত ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখানে ৫টি বুথে সব পুলিং এজেন্ট ছিল। কাঁচপুর ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে নারী-পুরুষের লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে ৪টি কেন্দ্র ছিল। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তারা ভোট দিচ্ছেন। সেখানে কর্মরত একটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সাইফুল ইসলাম প্রধান বলেন, এই কেন্দ্রে ৩ হাজার ৩০ নারী ভোটার রয়েছে। বেলা সোয়া ২টা পর্যন্ত ৬০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জের এনায়েত নগরে এনায়েত নগর কিন্ডারগার্টেন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা তাদের ভোট দিচ্ছেন। এ সময় কথা হয় ৮০ বছরের পঙ্গু বৃদ্ধ আশেক আলীর সঙ্গে। তিনি হুইল চেয়ারে বসে ভোট দিতে আসেন। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন অন্যবারের চেয়ে সুন্দর ও সুষ্ঠু হচ্ছে। আমার ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছি। যিনি আমাদের জন্য কাজ করবেন সে রকম প্রার্থীকেই আমি ভোট দিয়েছি।

সকাল ১০টার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্বপাড়া মা আমেনা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভোট দিতে আসা তারা মিয়া বলেন, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে আমার ভোটটি পছন্দের প্রার্থীকে দিতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।

শিমরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা প্রবীণ ভোটার আবদুল মতিন মাস্টার বলেন, সকাল ৯টার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে দেশের উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দিয়েছি। আমাদের এখানে সুন্দর ও সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে- এতে কোনো সন্দেহ নেই।

দুপুরে ফতুল্লার ধর্মগঞ্জে সোনার বাংলা সংসদের অস্থায়ী কেন্দ্রে ভোট দেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান, তার স্ত্রী সালমা ওসমান, ছেলে অয়ন ওসমান ও মেয়ে। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জের এবিসি স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম সেলিম ওসমান।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম জানান, আমরা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। নারায়ণগঞ্জে তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জনগণের নিরাপত্তায় আমরা সদা তৎপর রয়েছি।

সর্বশেষ খবর