মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভালো গ্রাহক ৭ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘যারা ভালো ঋণগ্রহীতা তাদের সুদের হার আমরা কমিয়ে দিচ্ছি। তাদের ডাউন পেমেন্ট হবে ২ শতাংশ। তাদের যা ঋণ আছে, সেই ঋণ থেকে তারা ২ শতাংশ পরিশোধ করবেন। বাকি ঋণের ওপরে আমরা ৭ শতাংশ হারে সুদ নেব।’ গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরে এনইসি ভবনে সরকারের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান অর্থমন্ত্রী। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘খেলাপিদের আমরা ১২ বছর সময় দিচ্ছি। যার যা ঋণ আছে, ছোট বা বড় সব ঋণগ্রহীতা, তারা ২ শতাংশ পরিশোধ করবে। আর যে ঋণটা থাকবে, সেটার ওপর সবসময় তারা ৭ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি নয়, সরল সুদ দেবে।’ তিনি বলেন, ‘ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে কেউ ভালো ঋণগ্রহীতা এবং কেউ অসাধু ঋণগ্রহীতা। যারা ভালো ঋণগ্রহীতা তাদের সুযোগ দেব আর অসাধুদের এই সুবিধা দেওয়া হবে না। আমরা বহু আগে থেকেই বলে আসছিলাম, আমাদের সুদের হার সিঙ্গেল (এক) ডিজিটের হবে, এটা এত দিন আমরা করতে পারিনি। এখন আমরা এক ডিজিট নিজেরাই করে দিচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। সর্বোচ্চ এক মাস লাগবে। এটা কার্যকর হবে ১ মে থেকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা খারাপ ঋণগ্রহীতা, তাদের রেকর্ডই তো আছে। টাকা নিলাম, ১০ বছরে এক টাকাও দিলাম না, তাহলে আমি ভালো? বা টাকা নিলাম দুই বছরেও এক টাকা দিলাম না, আমি কি ভালো? কিংবা ১০ বার আমি রপ্তানি করলাম, কিন্তু একবারও আমি ব্যাংকে টাকা ঢোকালাম না, তাহলে কি আমি ভালো? কারা ভালো আর কারা অসাধু ঋণগ্রহীতা, তা বের করার জন্য একটা বিশেষ অডিটের ব্যবস্থা করেছি। এটার কাজ শুরু হবে। সেখান থেকেও আমরা জানতে পারব, কারা ভালো আর কারা খারাপ।’ মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন ঋণগ্রহীতা এখন থেকে যারা আসবে, তাদের জন্যও আমরা সুদের হার কমিয়ে দেব। একটা বাজারভিত্তিক সুদ হবে। তার ভিত্তিতে কেউই লোকসান করবে না। যারা আগে ১০, ১২ বা দুই ডিজিট সুদে ঋণ নিয়েছেন, তা তাদের দিতে হবে না। ৭ শতাংশ হারে সুদ দিলেই হবে।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘যদি কেউ বিপদে পড়ে যান, তাদের জন্যও বের হওয়ার ব্যবস্থা আছে। আমরা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি করব। আমাদের ইনসলভেন্সি আইন তৈরি হচ্ছে। এ আইনের আওতায় নন-পারফরমিং ঋণগুলো, সব ওই কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেওয়া হবে। তারা এগুলো পাবলিক টেন্ডার দিয়ে বিক্রি করে যা পাবে, তা সরকারকে দিয়ে দেবে। ঋণগ্রহীতাদের বাদ দিয়ে আমাদের চলার কোনো ব্যবস্থা নেই।’ তিনি বলেন, ‘লাভবান হলে সবাই খুশি। কিন্তু লোকসান হলে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সে রকম কিছু দিতে পারি না। লোকসান হলেও আমরা তাদের ওপর সুদ বলবৎ রাখি। এই যে ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ছিল, এগুলো দূর করার জন্য সাবেক অর্থমন্ত্রী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। নির্বাচনের কারণে তিনি সেই কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বসেছিলাম।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর