জাতিসংঘে বাংলাদেশসহ এলডিসি-উত্তর দেশগুলোর জন্য একটি আন্তর্জাতিক প্রণোদনা প্যাকেজ অতিসত্বর নির্ধারণের জন্য তাগিদ দিয়েছেন বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণয়নে রাজনৈতিক ও কারিগরি প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হওয়া প্রয়োজন। ২০২১ সালে জাতিসংঘের পঞ্চম এলডিসি সম্মেলনে এ প্যাকেজ অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে নিযুক্ত এলডিসির রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফ করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল সিপিডির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের এলডিসি গ্রুপের সমন্বয় ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাবাব ফাতিমার সভাপতিত্বে ওই ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন আফগানিস্তান, লাওস, নেপাল ও সিয়েরা লিওনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতরা। এ ছাড়া অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি কমিটির (সিডিপি) সচিবালয়ের প্রধান রোল্যান্ড মোলারাস, অফিস অব দ্য হাই রিপ্রেজেনটেটিভ লিস্ট ডেভেলপড অ্যান্ড ল্যান্ডলকড কান্ট্রিজের (ওএইচআরএলএলএস) ডেপুটি চিফ সুসানাহ উল এবং সিডিপি সচিবালয়ের অর্থনৈতিক কর্মকর্তা মাথিয়াস ব্রুকনার।
ব্রিফিংয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আগামী দশকে বাংলাদেশসহ ১২টি দেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে। সাম্প্রতিক উন্নয়ন ইতিহাসে এটি একটি বিরল সাফল্যের উদাহরণ। তবে বিভিন্ন আর্থসামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা এবং ভঙ্গুরতাসহ এই দেশগুলোর উত্তরণ ঘটবে। এ ক্ষেত্রে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সম্প্রদায়কে উত্তরণ হতে যাওয়া এ দেশগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ হতে যাওয়া দেশগুলো কাঠামোগত দুর্বলতায় ও বিভিন্ন ঝুঁকিতে আছে। এরা অনেকেই ছোট দ্বীপরাষ্ট্র, স্থলবেষ্টিত দেশ, জলবায়ু পরিবর্তনে আক্রান্ত এবং সংঘাত-পরবর্তী সমাজ। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এই দেশগুলো বর্তমানে যেসব বিশেষ আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, এলডিসি থেকে উত্তরণ হওয়ার পর সেগুলো আর তারা পাবে না। এ ক্ষেত্রে উত্তরণ-পরবর্তী সম্ভাব্য নেতিবাচিক প্রভাব সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের অবহিত করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার, রেয়াতি ও মিশ্র অর্থায়ন সুবিধা, মেধাস্বত্ব অধিকারের প্রয়োগ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রভাবের বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।